দু’মাস পর বসতে চলেছে বাদল অধিবেশন। তবে, করোনা পরিস্থিতি জেরে অধিবেশনের সময় কমাতে মরিয়া সরকার। সময় কমাতে গিয়ে কোপ পড়ল সংসদে বিরোধীদের ক্ষমতার উপর। এবার থাকছে না প্রশ্নোত্তর পর্ব। জিরো আওয়ারেও কাঁচি করা হচ্ছে। এই দুটি ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি বিরোধীরা তাঁদের মতামত রাখতে পারেন। তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের তোপ, করোনার দোহাই দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে।
অনেকে প্রশ্ন তুলছেন তবে সংসদেও কি এবার মন কি বাত? সেখানেও কি এবার খেলনা নিয়ে চর্চা শুনতে হবে সকলকে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে বাদল অধিবেশন। তবে, রাজ্যসভা এবং লোকসভার কাজ একসঙ্গে হবে না। সাংসদদের সুরক্ষা স্বার্থে দুই কক্ষের অধিবেশনের সময় ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। লোকসভার প্রথম দিন সকাল ৯টা থেকে ১টা পর্যন্ত এবং বাকি দিনগুলি বিকেল ৩টে থেকে ৭টা পর্যন্ত চলবে।
রাজ্যসভা চলবে প্রথম দিন বিকেল ৩টে থেকে ৭টা পর্যন্ত বাকি দিনগুলি সকাল ৯টা থেকে ১ পর্যন্ত। আগামী ১ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে বাদল অধিবেশন। জানা যাচ্ছে, সাংসদরা সামাজিক দূরত্ব মেনে দুই কক্ষেই বসতে পারবেন। দুই কক্ষে বসানো হবে জায়ান্ট স্ক্রিন।
অধিবেশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ প্রশ্নোত্তর পর্ব কেন বাদ দেওয়া হচ্ছে। সরকারের যুক্তি, প্রশ্নোত্তর পর্বের জন্য বিরোধীদের প্রশ্ন জমা দিতে হয় ১৫ দিন আগে। বিরোধীদের প্রশ্নের ভিত্তিতে উত্তরমালা তৈরি করেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী। তবে, সংসদে বিরোধীদের প্রশ্নে উত্তর দেওয়ার পর, যদি পাল্টা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়, তখন মন্ত্রীর আপ্তসহায়ক প্রস্তুত থাকেন মন্ত্রীর উত্তরে তথ্য জোগানে। অর্থাত্ প্রশ্নোত্তর পর্বের দিনে গ্যালারিতে হাজির থাকেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের আমলারা। ভিড় কমাতেই প্রশ্নোত্তর পর্ব প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। উল্লেখ্য এখনও পর্যন্ত প্রশ্নোত্তর পর্বের জন্য প্রশ্ন জমা দেওয়ার কোনও বিজ্ঞপ্তি সরকারের তরফে জারি করা হয়নি।
তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন জানান, বিরোধীদের প্রশ্ন করার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে সরকার। সংসদের অন্যান্য কাজ একই রয়েছে শুধুমাত্র প্রশ্নোত্তর পর্ব বাদ দেওয়া হচ্ছে। করোনার দোহাই দিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, জিরো আওয়ারের সময়সীমা কমিয়ে ৩০ মিনিট করা হয়েছে। লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লাকে একটি চিঠি দেন কংগ্রেসের লোকসভা দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি চিঠিতে লেখেন, প্রশ্নোত্তর পর্ব এবং জিরো আওয়ারে দেশের সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা তুলে ধরার সুযোগ পান বিরোধীরা। সেই অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে বলে চিঠিতে অভিযোগ করেন তিনি।
অনেকে বলছেন তাহলে অধিবেশন ডাকার দরকারই বা কী ছিল? দিল্লির আলিশান পার্টি অফিসে বসেই তো সব ঠিক করে নিতে পারত বিজেপি। শুধু শধু জনগনের টাকা খরচ করে অধিবেশন ডাকারই বা কি ছিল? যদি বিরোধীরা প্রশ্নই না করে পারে তাহলে অধিবেশনের প্রয়োজনী বা হচ্ছে কেন? শুধুমাত্র নিজেদের এজেন্ডার বিল পাশ করিয়ে নেওয়ার জন্য এই অধিবেশন আয়োজন করেছে সরকার। অভিযোগ বিরোধীদের।