ট্রাক্টর র্যালিকে (Tractor rally) কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র রাজধানী। পুলিস-অন্নদাতা সংঘর্ষে উত্তপ্ত দিল্লি। এদিন লালকেল্লায় ঢুকে পড়েন আন্দোলনরত কৃষকরা। পতাকা লাগিয়ে দেন লালকেল্লার চূড়ায়। ট্রাক্টর উল্টে মৃত্যুও হয় এক কৃষকের। সব মিলিয়ে রাজধানীর একাংশ জুড়ে অবনতি হয় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির। কৃষকদের এহেন আন্দোলনের সমালোচনায় মুখর কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি-সহ দেশের বিভিন্ন দলের নেতারা। তার মধ্যেই আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে তড়িঘড়ি বৈঠকে বসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভল্লা ও দিল্লির পুলিস কমিশনার এসএন শ্রীবাস্তবের উপস্থিতিতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করেন অমিত শাহ। দিল্লির বিভিন্ন অংশে কৃষক আন্দোলনের সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন তিনি। সূত্রের খবর এই বৈঠকে নিরাপত্তা সংক্রান্ত কোনও উচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে থাকতে পারে।
মঙ্গলবার দুপুরে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, নিরাপত্তা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতেই ইন্টারনেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিঙ্ঘু, গাজিপুর, টিকরি, মুকারবা চক, নাঙ্গলোই-এলাকায় বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ইন্টারনেট পরিষেবা। ২৬ জানুয়ারি দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২ পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ থাকছে। পাশাপাশি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে দিল্লি মেট্রোর বেশ কয়েকটি স্টেশনও। আইটিও মোড়ে যখন প্রাথমিক ঝামেলা হয়, তখনই বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয় একাধিক মেট্রো স্টেশন।
আরও পড়ুন: বৈষম্যের ভাইরাস! লকডাউনে দেশের ধনকুবেরদের সম্পদ ৩৫ শতাংশ বেড়েছে, বেকার বৃদ্ধি লক্ষাধিক
পরিস্থিতি এতটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যে আসরে নামেন কৃষক আন্দোলনের সমর্থক মুখ্যমন্ত্রীরা। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত ও পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিংহ কৃষকদের শান্তিপূর্ণ ভাবে বিক্ষোভ চালিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সংবাদ মাধ্যমে একই স্বর শোনা যায় আন্দোলনের মুখ যোগেন্দ্র যাদব, রাকেশ টিকায়েতদের গলাতেও। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি তাতে।
তাই দীর্ঘক্ষণ বুঝিয়ে-সুঝিয়েও লালকেল্লা মুক্ত করার চেষ্টায় সফল না হওয়ায় প্রতিবাদীদের সরাতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। মিনিট তিরিশের জন্য খালি হয় লালকেল্লা। তারপর আবারও নতুন করে বিক্ষোভরত কৃষক জনতা লালকেল্লা ঢুকে পড়ে। পুলিশকে দিশেহারা করে দেন কৃষকরা।
#FarmersProstests
Did any channel aired this? Stop blaming only farmers. This has also happened today. pic.twitter.com/wrvVvpswcX— Tнᴀʟᴀ_Kᴀιʟᴀsн (@THALA6072531122) January 26, 2021
সকালে আইটিও মোড়ে পুলিশ-জনতা খণ্ডযুদ্ধের যে চিত্র ধরা পড়েছিল, বেলা গড়াতেই সেই একই চিত্র ধরা পড়ে নাঙ্গলোই এলাকায়। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধে কৃষকদের। একাধিক ট্র্যাক্টর দাঁড় করিয়ে রেখে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। খালি করে এলাকা। কিন্তু সর্বত্রই নিরাপত্তকর্মীদের থেকে বিক্ষোভকারীদের সংখ্যা এতই বেশি ছিল যে পুলিশের পক্ষে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে।
যদিও এত কাণ্ডের পরে সংযুক্ত কিসান মোর্চার পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্র দিবসে কৃষকদের মিছিলে অভূতপূর্ব অংশগ্রহণে আমরা অভিভূত। তবে, যে অপ্রীতিকর ঘটনাগুলি ঘটেছে, সেগুলির জন্য আমরা দুঃখিত ও হতাশ। যাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের থেকে আমরা আমাদের আলাদা করতে চাই।’
যদিও সোশ্যাল মাধ্যমে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে অন্নদাতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচার। বলা হচ্ছে, তারা নাকি জাতীয পতাকার অবমাননা করেছে। তেরঙ্গা ফেলে দিয়ে খালিস্থানি পতাকা লাগানো হয়েছে। যদিও দুটি দাবিই ভুয়ো। একটি খালি পোলে লাগানো হয়েছে শিখদের ‘নিশান সাহেব’ ফ্ল্যাগ।
Difference B/w Nishan Sahib Flag and a Khalistani Flag .
Fools dont know the difference and spreading fake rumours
I stand with Farmers.
Red Fort#HistoricTractorMarch #FarmersProstests pic.twitter.com/73zEheajwC— Amarpreet Singh (@amar2vi) January 26, 2021