করোনাকালে ভারতে আর্থিক বৈষম্য অনেক বেড়েছে, এমন আশঙ্কা আগেই করা হচ্ছিল। এ বার সেটাই জানিয়ে দিল আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অক্সফ্যাম (Oxfam)। তাদের রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে লকডাউনের সময়ে ভারতে গুটিকতক ধনকুবেরের সম্পদ ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। অন্যদিকে কাজ হারিয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
বিশ্ব অর্থনৈতিক মঞ্চ (World Economic Forum)-এর বৈঠকের আগে অক্সফ্যামের করা এই সমীক্ষায় এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। ২৬ জানুয়ারি থেকে সুইৎজারল্যান্ডের দাভোসে শুরু হওয়া বৈঠকে পেশ হবে এই সংক্রান্ত রিপোর্ট। অক্সফ্যামের ওই রিপোর্টের শিরোনাম ‘দ্য ইনইক্যুয়ালিটি ভাইরাস’ অর্থাৎ ‘বৈষম্যের ভাইরাস’। কী বলা হয়েছে অক্সফ্যামের ওই রিপোর্টে?
১) লকডাউনের সময় দেশের ধনকুবেরদের সম্পদ বেড়েছে গড়ে ৩৫ শতাংশ। অন্যদিকে কাজ হারিয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ। দেশের ৮৪ শতাংশ পরিবারের আয় বিভিন্নরকম ভাবে কমেছে।
আরও পড়ুন: প্রজাতন্ত্র দিবসে ট্র্যাক্টর মিছিলে ছাড়পত্র দিল্লি পুলিশের, ‘নৈতিক জয়’ বললেন অন্নদাতারা
২) গত বছর মার্চ অর্থাৎ যে সময় থেকে লকডাউন কার্যকর হয় তখন থেকে ভারতের ১০০ ধনকুবেরের যে পরিমাণ সম্পদ বেড়েছে তাতে তাঁরা দেশের ১৩ কোটি ৮০ লক্ষ দরিদ্রতম মানুষকে ৯৪ হাজার ৪৫ টাকা করে দান করতে পারতেন।
৩) অতিমারির সময়ে রিলায়্যান্স কর্ণধার মুকেশ অম্বানীর ঘণ্টা পিছু যা আয় তা রোজগার করতে এক জন অদক্ষ শ্রমিকের ১০ হাজার বছর লাগবে। প্রসঙ্গত, গত বছর অগস্টেই বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে উঠে আসেন রিলায়্যান্স কর্ণধার।
৪) শীর্ষস্থানে থাকা ১১ জন ধনকুবেরের যে পরিমাণ সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে তার অনুপাতে ১ শতাংশ কর বাড়ানো হলে জন ওষধি প্রকল্পের চেহারাটাই বদলে যেত।
এ দিকে, শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সাবান দিয়ে হাত ধোওয়ার মতো কোভিড বিধি নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে ওই রিপোর্ট। বলা হয়েছে, শহর এলাকায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার মতো বিধি মেনে চলা ৩২ শতাংশ মানুষের কাছে বিলাসিতা মাত্র। কারণ তাঁরা বেশির ভাগই এক অথবা দুই কামরার বাড়িতে বসবাস করেন। ৩০ শতাংশ মানুষের কাছে হাত ধোওয়ার জন্য সাবান জল জোগাড় করা কঠিন বলেও উল্লেখ রয়েছে ওই রিপোর্টে।
আরও পড়ুন: নেতাজির লুকে প্রসেনজিতের ছবির উন্মোচন করলেন রাষ্ট্রপতি? দানা বাঁধছে বিতর্ক