কলকাতা: করোনা-আবহে ফের নতুন করে সংঘাত কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের। শনিবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একটি চিঠি লেখেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই রাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে আসা ট্রেন ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শনিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেওয়া ওই চিঠিতে অমিত শাহ লিখেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে পৌঁছে দিতে রেল শ্রমিক স্পেশাল চালাচ্ছে। এর পরই তিনি অভিযোগ করেছেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের থেকে প্রত্যাশা মতো সাহায্য পাওয়া যাচ্ছে না। রাজ্য সরকার ট্রেন পৌঁছতে দিচ্ছে না। এতে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রতি অবিচার করা হচ্ছে। এর ফলে তাদের দুর্ভোগ আরও বা়ডছে।’ কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত দু’লক্ষ শ্রমিককে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে বলেও দাবি করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
অমিত শাহের এই অভিযোগের জবাব দিয়েছে তৃণমূল। দলী।য় সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অসত্য বলছেন। এই চিঠি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করা খারাপ রাজনীতি। সেটা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর থেকে আশা করা যায় না।’’
প্রসঙ্গত, মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি ও উত্তরপ্রদেশ থেকে কোনও শ্রমিককে ফেরানোর ব্যাপারে এখনও কোনও ইঙ্গিত দেয়নি নবান্ন। তা ছাড়া এ ব্যাপারে নবান্নের যে রেসপন্স নেই সে বিষয়ে গত কদিন ধরে বারবার অভিযোগ করেছেন লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, আমি অন্য রাজ্যের নোডাল অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাঁরা জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গের নোডাল অফিসার কোনও রেসপন্স করছেন না।
আরও পড়ুন: লকডাউন তোলা নিয়ে কী ভাবছে কেন্দ্র? মোদী সরকারের কাছে স্পষ্ট জবাব চাইলেন রাহুল
গতকাল রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষও বলেছেন, বাংলার শ্রমিকদের ফেরাতে তৃণমূল সরকারের যদি অসুবিধা থাকে, তা হলে জানিয়ে দিক। বিজেপি নিজের খরচে ফেরানোর ব্যবস্থা করবে।
সার্বিক এই পরিস্থিতিতে আগামী ৯, ১০ এবং ১১ মে আরও কিছু শ্রমিককে ফেরাতে নবান্ন আটটি ট্রেনের ব্যবস্থা করছে বলে জানা গিয়েছে। ওই সব স্পেশাল ট্রেনের একটি খসড়া শিডিউল ইতিমধ্যে তৈরি করা হয়েছে। নবান্নের ওই খসড়া থেকে জানা গিয়েছে, আটটি ট্রেন ছাড়বে যথাক্রমে চণ্ডীগড়, জলন্ধর, বেঙ্গালুরু, ভেলোর ও হায়দরাবাদ স্টেশন থেকে।
নবান্ন সূত্রে বলা হচ্ছে, মূল সমস্যা হল, রাজ্যে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন ব্যবস্থার পরিধি কম। প্রচুর শ্রমিককে একসঙ্গে ফেরালে কোথায় রাখা হবে। তার খরচ কে দেবে। বড় কথা হল, সংক্রমণ ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। সেই কারণেই হয়তো রাজ্য সরকার ইতস্তত করছে। তবে রাজ্য সরকার স্থির করেছে, ধাপে ধাপে সমস্ত শ্রমিককেই ফেরানো হবে। কাউকে আটকানো হবে না।
আরও পড়ুন: বাবরি মামলায় অভিযুক্ত আদবানি-যোশী! অগস্টের মধ্যে নিম্ন কোর্টকে রায় ঘোষণার সুপ্রিম নির্দেশ