পূর্ব বর্ধমান জেলায় গত ৪৮ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ২২ জন করোনা আক্রান্ত হলেন। এই নিয়ে জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৯৯ জন। এখন বর্ধমানের করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৮৮ জন। ২০৯ করোনা হাসপাতালে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এই জেলায় এদিন পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় উদ্বিগ্ন জেলার বাসিন্দারা। করোনার সংক্রমণ রুখতে বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যবিধি মানতে বাধ্য করা সহ বেশ কয়েকটি কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
পূর্ব বর্ধমান জেলায় গত বৃহস্পতিবার আক্রান্ত হয়েছিলেন ১০ জন। তার মধ্যে ৩ জন বর্ধমান পৌরসভা এলাকার বাসিন্দা। এছাড়াও কাটোয়া পৌরসভা এলাকায় নতুন করে একজন আক্রান্ত হয়েছিলেন। দাঁইহাট পৌরসভা এলাকাতেও একজন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল। এছাড়া কাটোয়া এক নম্বর ব্লক, কেতুগ্রাম এক নম্বর ব্লক, মেমারি দু’নম্বর ব্লক, গলসি দু’নম্বর ব্লক ও খণ্ডঘোষ ব্লকের একজন আক্রান্তের হদিশ মিলেছিল।
গত ২৪ ঘণ্টায়য় নতুন করে ১২ জন করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। তার মধ্যে বর্ধমান পুরসভা এলাকাতেই রয়েছে ৫ জন। কাটোয়া ও কালনা পুরসভা এলাকায় একজন করে করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে। বর্ধমান এক নম্বর ব্লকে নতুন করে দু’জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। রায়না এক নম্বর ব্লক, পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লক ও খন্ডঘোষ ব্লকে একজন করে করোনা আক্রান্তের হদিশ মিলেছে।
আরও পড়ুন: ‘সরকার ভগবান নয়, মানুষকেও সচেতন হতে হবে!’ করোনা নিয়ে ফের আবেদন মমতার
বর্ধমান শহরে করোনার সংক্রমণ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়ায় প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। করোনার সংক্রমণের বিষয়ে বাসিন্দাদের সচেতন করতে শহরে মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। বাইরে বের হলে সকলকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা হচ্ছে।
বর্ধমান শহরের সাতটি এলাকাকে এখন কন্টেইনমেন্ট জোন ঘোষণা করে সেখানে লকডাউন চলছে। বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে এলাকা। সেই এলাকায় বাইরের বাসিন্দাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। কন্টেইনমেন্ট জোনের বাসিন্দাদেরও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। বর্ধমান শহরের ছোটনীলপুর পীরতলা, বড়নীলপুর মোড়, বড়নীলপুর, রানীগঞ্জ বাজার, লোকো কলোনি, কাজিরহাট, শতাব্দী বাগ, খাজা আনোয়ার বেড়, আদি কালী বাড়ি এলাকায় করোনা সংক্রমণের হদিশ মিলেছে। এই সব এলাকায় লকডাউন চলছে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তার আশপাশের বাসিন্দারা।
বিসি রোডের রানিগঞ্জ বাজার ও তেঁতুলতলা বাজারের মধ্যবর্তী গণেশতলা বাজারকে কনটেনমেন্ট জোন করা হয়েছে। বন্ধ করা হয়েছে তেল ও গম ভাঙানোর দোকান। বন্ধ করা হয়েছে শহরের সবচেয়ে পুরনো মাছের বাজারও।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই মুহূর্তে ৬৯টি এলাকায় কন্টেইনমেন্ট জোন গড়ে সেখানে লকডাউন চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে বর্ধমান পৌরসভা এলাকায় সাতটি কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে। দাঁইহাট পৌরসভা এলাকায় একটি, কালনা পৌরসভা এলাকায় দুটি কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে। কাটোয়া পৌরসভা এলাকায় সাতটি কন্টেইনমেন্ট জোনে লকডাউন পালন করা হচ্ছে। মেমারি পৌরসভা এলাকাতেও একটি কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে।
এছাড়া বর্ধমান দু’নম্বর ব্লকে একটি, গলসি এক নম্বর ব্লকে একটি, কালনা এক নম্বর ব্লকে পাঁচটি, কালনা দু’নম্বর ব্লকে চারটি, কাটোয়া এক নম্বর ব্লকে দুটি, কাটোয়া দু নম্বর ব্লকে তিনটি, কেতুগ্রাম এক নম্বর ব্লকে আটটি, খণ্ডঘোষ ব্লকে একটি, মেমারি এক নম্বর ব্লকে সাতটি, মেমারি দু’নম্বর ব্লকে চারটি, মঙ্গলকোট ব্লকে তিনটি কন্টেইনমেন্ট জোন রয়েছে। পূর্বস্থলী এক নম্বর ব্লকের পাঁচটি, পূর্বস্থলী দু’নম্বর ব্লকেও পাঁচটি ও রায়না দু’নম্বর ব্লকে দুটি কন্টেইনমেন্ট জোনে লকডাউন চলছে। এই সব এলাকায় লকডাউন নিশ্চিত করতে পুলিশি নজরদারি রয়েছে।
আরও পড়ুন: ফোনেই মিলবে চিকিৎসা পরিষেবা! রাজ্যের সব জেলায় শুরু টেলি মেডিসিন, জেনে নিন কিছু গুরুত্বপূর্ণ নম্বর