ভিন্ জাতের যুবকের সঙ্গে সম্পর্কের শাস্তি হিসেবে স্বামীহারা আদিবাসী যুবতীকে গণধর্ষণ এবং সালিশি সভা বসিয়ে জরিমানা চাওয়ার অভিযোগ উঠল। মঙ্গলবার সন্ধে থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত এত কিছু ঘটে গেলেও অভিযোগ সামনে আসে শনিবার বিকেলে। বীরভূমের মহম্মদবাজারের ওই ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে গ্রামেরই মোড়ল-সহ তিন জন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দুই সন্তানের মা, বছর ত্রিশের ওই যুবতী মহম্মদবাজারের চরিচা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। বেশ কয়েক বছর আগে তাঁর স্বামী মারা যান। এলাকারই এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে ওই যুবক ভিন্জাতের হওয়ায় তা ভাল চোখে দেখেননি গ্রামবাসীদের একাংশ।
আরও পড়ুন: স্বপ্নের নাম ‘সবুজ সাথী’! রাজ্যেই এবার হতে পারে সাইকেল কারখানা
মহম্মদবাজার থানায় দায়ের করা অভিযোগে ওই নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ঘটনাটি ১৮ অগস্ট, মঙ্গলবারের। ওদিন সন্ধ্যায় গ্রামের এক পুজোর অনুষ্ঠান থেকে ওই যুবকের সঙ্গে বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। শেওড়াকুড়ি মোড়ের সামনে গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা তাঁদের পথ আটকায়। অভিযোগ, তাঁদের স্থানীয় ক্লাবে আটকে মারধর করে তারা। গভীর রাতে পাশের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ওই যুবতীকে ধর্ষণ করে ক্লাবের সদস্য ৫ যুবক। ১৯ অগস্ট, বুধবার সকালে তাঁদের ছেড়ে দেয় অভিযুক্তরা।
তবে থানায় অভিযোগে এ ব্যাপারে উল্লেখ না থাকলেও গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, বুধবার সকালে গ্রামে সালিশি সভা বসে। সেখানে নির্যাতিতাকে ১০ হাজার ও তাঁর সঙ্গীকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। বৃহস্পতি ও শুক্রবার— এই দু’দিন আতঙ্কেই কেটে যায় তাঁদের। শনিবার এক আদিবাসী নেতার উদ্যোগে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। ওদিন সন্ধ্যায় সিউড়ি জেলা হাসপাতালে নির্যাতিতার ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়। জানা গিয়েছে, তাতে গণধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।
জেলা পুলিশ সুপার শ্যাম সিং জানান, ৫ অভিযুক্তের মধ্যে তাম্বর মরান্ডি ও জলপা হাঁসদা নামে দু’জনকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধরা পড়েছে গ্রামের মোড়লও। এদিকে জানা গিয়েছে, আদালতে তোলা হলে ধৃত তাম্বর মরান্ডি ও জলপা হাঁসদাকে ৭ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। নির্যাতিতার গোপন জবানবন্দিও নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ফের বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ, প্রবল বৃষ্টিতে ভাসতে চলেছে দক্ষিণবঙ্গ-কলকাতা