কয়েকমাস আগে অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মাধ্যমে দিনহাটা বিধানসভা কেন্দ্রে ৫৭ ভোটে জিতেছিলেন নিশীথ প্রামাণিক। এরপর সাংসদ পদ বহাল রাখতে দিনহাটার বিধায়কপদ ছাড়েন নিশীথ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। এরপর ঘোষিত হয় উপনির্বাচনের নির্ঘণ্ট। দিনহাটায় পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয় নিশীথকে। তবে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিশীথ ফেল করলেন তৃণমূলের উদয়ন গুহর কাছে। ১ লক্ষ ৪৮ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে সেখানে জয় ছিনিয়ে নেন উদয়ন। আর এই বিশাল হারের জেরে নিজের বুথেও বিজেপিকে জেতাতে পারেননি নিশীথ।
জানা গিয়েছে, নিশীথ প্রামাণিকের ২৩৪ নম্বর বুথে (ভেটাগুড়ি চৌহদ্দি) বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডল মাত্র ৯৫টি ভোট পান। এদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের উদয়ন গুহ ৪৬১ ভোট পান এই বুথে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর নিজের বুথেই বিজেপি পিছিয়ে, এটা নিশীথ প্রামাণিকের লজ্জার বিষয় বলে খোঁচা দেন উদয়নের ভোটিং এজেন্ট পার্থপ্রতিম রায়।
একই পরিস্থিতি দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী অশোক মণ্ডলের বুথেও। ওই বুথে বিজেপি পেয়েছে ১৫৬ ভোট। অথচ তৃণমূল পেয়েছে ৪৬০ ভোট। শুধু তাই নয় নিশীথ এবং অশোকের বুথের মতো ফল বহু এলাকাতেই। যার ফলে ছ’মাস আগে ৫৭ ভোটে হেরে যাওয়া তৃণমূল প্রার্থী উদয় গুহের এ বার এক লক্ষ ৬৪ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়।
এমন বিপুল জয়ে স্বাভাবিক ভাবেই উচ্ছ্বসিত উদয়ন। নিশীথের নাম না করে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘আজ প্রমাণ হয়ে গিয়েছে উনি কেন্দ্রীয় প্রতিবন্ধী মন্ত্রী। উনি কোচবিহারের স্বঘোষিত মহারাজ।’’ যদিও, পদ্মশিবিরের কোচবিহার জেলার সভাপতি মালতী রাভা রায়ের মতে, ‘‘এত সন্ত্রাস! মানুষকে বাড়ি থেকে বার হতে দেওয়া হয়নি। আমরা কমিশন এবং প্রশাসনকে বার বার বলেছি। এমন সন্ত্রাস কোচবিহারের কেউ কখনও দেখেননি। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। এই ফলেই তা কি প্রমাণ হচ্ছে না? মানুষ এমন ভাবে কখনও ভোট দেয়?’’
নিশীথের বুথে বিজেপি হেরেছে, এ নিয়ে অবশ্য নাম না করেই মালতী বলছেন, ‘‘ওঁর দায়িত্বশীল তো অবশ্যই হওয়া উচিত ছিল।’’ দিনহাটার এই দিন বদলের দিনে অবশ্য কোথাও দেখা মেলেনি নিশীথের।