যোধপুর: ফের ভেঙে পড়লো ভারতীয় বায়ুসেনার যুদ্ধবিমান মিগ-২৭। রবিবার সকালে রাজস্থানের সিরোহিতে ভেঙে পড়েছে এই যুদ্ধ বিমান। তবে বায়ুসেনা সূত্রে খবর, নিরাপদেই রয়েছেন পাইলট। ঠিক সময়ে জরুরি অবতরণ করেন তিনি।
বায়ুসেনার আধিকারিকরা জানিয়েছেন, মিগ-২৭ যুদ্ধ বিমানটি রুটিন পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ওড়ানো হয়েছিল। কিন্তু উড়ানের পর মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে বিমানটি। তবে কী কারণে এই যুদ্ধ বিমান ভেঙে পড়েছে তা এখনও সঠিক ভাবে জানা যায়নি। যোধপুর থেকে ১৮০ কিলোমিটার দূরে রবিবার সকালে ভেঙে পড়েছে এই যুদ্ধ বিমান। গত ফেব্রুয়ারিতেই রাজস্থানের জয়শলমিরে ভেঙে পড়েছিল আরও একটি মিগ ২৭ যুদ্ধবিমান। প্রশিক্ষণের কাজ চলার সময়ই সেই দুর্ঘটনাটি ঘটেছিল। সেই দুর্ঘটনাতেই নিরাপদে ভেঙে পড়া যুদ্ধবিমান থেকে বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন যুদ্ধবিমানের পাইলট।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত কয়েকমাসে এই নিয়ে ভেঙে পড়েছে তিনটি মিগ যুদ্ধ বিমান।দিন কয়েক আগে রাজস্থানের বিকানেরে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মিগ-২১ যুদ্ধবিমান। ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের খুব কাছে ভেঙে পড়ে বিমানটি। দুর্ঘটনার অল্প কিছুক্ষণ আগে অবশ্য প্যারাশুটের সাহায্য বিমান থেকে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন পাইলট। জানা গিয়েছে, বায়ুসেনার ঘাঁটি থেকে ওড়ার কিছুক্ষণ পরই মাঝ-আকাশে মিগ-২১ বাইসন বিমানে আগুন লেগে যায়। বিকানেরের শোভাসার কি ধানি এলাকায় ভেঙে পড়ে বিমানটি। এরআগে ফ্রেরুয়ারিতে কাশ্মীরের বুদগাম জেলায় ধানখেতে বায়ুসেনার একটি যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন দুই পাইলট-সহ বায়ুসেনার চার আধিকারিক। প্রাণ গিয়েছিল এক স্থানীয় বাসিন্দারও। ২০১৮ সালের জুলাই মাসে হিমাচল প্রদেশের কাংড়া উপত্যকায় ভেঙে পড়েছিল আরও একটি বায়ুসেনার যুদ্ধ বিমান মিগ-২১। মারা গিয়েছিলেন যুদ্ধ বিমানের পাইলট।
গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সময় এই যুদ্ধবিমান ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। ১৯৯৯ সালের কার্গিল যুদ্ধের সময় শত্রুপক্ষের বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে বোমাবর্ষণ করতে কার্যকরী ভূমিকা নিয়েছিল ভারতীয়বায়ুসেনার এই যুদ্ধবিমান। সোভিয়েত জমানার এই যুদ্ধবিমান ভারতের হাতে আসে আটের দশকে । হামেশাই দুর্ঘটনার শিকার হয় রাশিয়া থেকে আমদানিকৃত এই যুদ্ধবিমান। বহু যুদ্ধের সাক্ষী এই মিগ সিরিজের বিমানগুলি বর্তমানে বায়ুসেনার পাইলটদের প্রশিক্ষণের জন্যই ব্যবহার হয়ে থাকে। লাগাতার দুর্ঘটনার কবলে পড়ার জন্য বেশ কিছু পাইলটের মৃত্যুও হয়েছে মিগ সিরিজের যুদ্ধবিমানগুলির জন্য। সেই কারণে প্রতিরক্ষা মহলে মিগ যুদ্ধবিমানকে ব্যঙ্গ করে বলা হয়, ‘উড়ন্ত কফিন’। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বহুবার সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছে, মিগ সিরিজের যুদ্ধবিমানগুলির অবলুপ্তি ঘটানো হোক। কিন্তু বাস্তবে তা আদপে হয়নি। তাই দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েই চলেছে।