ফের দলিত সম্প্রদায়ের মেয়েদের উপর হামলা যোগী আদিত্যনাথের রাজ্যে। এ বার নাবালিকা-সহ তিন বোনের উপর একসঙ্গে অ্যাসিড ছোড়ার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশে। সোমবার গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় তাদের উপর হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি শুরু করলেও গোটা ঘটনায় ফের প্রশ্নের মুখে যোগী আদিত্যনাথ প্রশাসন।
মঙ্গলবার ভোররাতে অ্যাসিড হামলার শিকার হয় ৮, ১২ ও ১৭ বছরের তিন দলিত বোন। পুলিশ জানিয়েছে, তারা যখন ঘুমোচ্ছিল, তখন খোলা জানলা দিয়ে তাদের দিকে শৌচালয়ে ব্যবহারের অ্যাসিড ছুড়ে মারা হয়। হামলার জেরে কিশোরীর মুখ ও বুকের অংশ পুড়ে গিয়েছে। আহত হয়েছে দুই নাবালিকার হাতও। ঘটনার পর গুরুতর আহত তিন জনকেই গোন্ডা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতাল সূত্রে খবর, অ্যাসিড-হামলায় ওই কিশোরীর শরীরের ৩৫ শতাংশ দগ্ধ হয়ে গিয়েছে। নাবালিকাদের এক জনের হাতের ২৫ শতাংশ এবং অন্য জনের ৫ শতাংশ পুড়ে গিয়েছে। তবে আপাতত তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন : মিথ্যে প্রচার করা টিভি চ্যানেলে আর বিজ্ঞাপন নয়, বেনজির সিদ্ধান্ত’ পার্লে কর্তৃপক্ষের
এই ঘটনায় ফের এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। আতঙ্কে কাঁপছে গোটা গ্রাম। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, জ্বলনীয় তরল বাড়ির খোলা জানালা দিয়ে ছোঁড়া হয়েছিল। যার জেরে তিন বোনের মধ্যে সবচেয়ে বড় বোন গুরুতর জখম হয়েছেন। মুখ ও ছাতি পুড়ে গিয়েছে। বাকি দুই বোন তুলনামূলক কম জখম হয়েছেন। গোন্ডা জেলা হাসপাতালে তাঁদের ভর্তি করা হয়েছে। তদন্তে নেমেছে পুলিশ। আবারও কি মিডিয়ার পথ আটকানো হবে ? সে প্রশ্ন ইতিমধ্যে উঠতে শুরু করেছে।
গোন্ডা জেলার পুলিশ সুপার শৈলেশকুমার পাণ্ডে বলেন, ‘‘আমরা ওই পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি।এই হামলায় এখনও পর্যন্ত কোনও সন্দেহভাজনের নাম করেননি তাঁরা। ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেছে ফরেন্সিক দল। পৌঁছেছে ডগ স্কোয়াডও। হামলাকারীর কে, শীঘ্রই তা জানা যাবে।’’
গত মাসে ওই রাজ্যের হাথরসে এক দলিত মেয়ের উপর গণধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পর এমনিতেই চাপে যোগী আদিত্যনাথ সরকার। এই আবহে ফের দলিত মেয়েদের উপর হামলার জেরে প্রশ্নের মুখে উত্তরপ্রদেশে শিশু তথা মহিলাদের নিরাপত্তা। ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরো-র সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপ্রদেশে তফসিলি জাতির উপর অপরাধের বেড়েই চলেছে। ওই রাজ্যে এ ধরনের অপরাধ বেড়েছে ৭.৩ শতাংশ।
এই খবর শুনে অনেকেই বলছেন ‘গেরুয়াধারী রাক্ষস রাজ্যের’ অবসান গেরুয়াধারী ঘটিয়ে প্রকৃত রামরাজ্যের গোড়াপত্তন না হলে ইউপিকে আর বাঁচানো যাবে না। বিদ্বেষকে হিন্দুত্ব বলে চলতে চেষ্টা করলেই তার ফল এটাই হবে। সাধারণ হিন্দু যতদিনে একথা বুঝবেন, ততদিনে হয়ত অনেকে দেরি হয়ে যাবে!
আরও পড়ুন : লাভ জিহাদে উসকানি! বিদ্বেষের বিষে বিজ্ঞাপনেও সামাজিক ঐক্যের ছবি সরাতে বাধ্য হল তানিষ্ক