কর্মসূত্রে বাবা-মাকে দিনের অধিকাংশ সময় বাইরে থাকতে হয়। পরিচারিকার হাতে শিশুর দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। বাবা-মা’র অনুপস্থিতিতে এবার সেই শিশুকেই শারীরিক নিগ্রহ করল পরিচারিকা। তাকে তুলে আছাড় মেরে ফেলল পরিচারিকা। পুরো ঘটনা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। হাড়হিম করা ঘটনা দেখে স্তম্ভিত শিশুটির অভিভাবকেরা। ১০ মাসের শিশুকন্যাকে শারীরিক নিগ্রহের জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে অভিযুক্ত পরিচারিকাকে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা জনস্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত নবমিতা ভট্টাচার্য। তাঁর স্বামী দেবাশিস দাস বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজের চিকিৎসক। ওই দম্পতি পাঁশকুড়ার মেচোগ্রামের একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন। ২০১৮ সাল থেকে নবমিতাদের ফ্ল্যাটে পরিচারিকার কাজ করেন কল্পনা সেন নামে বছর পঞ্চাশের এক মহিলা। গত বছর নভেম্বর মাসে শিশুকন্যার জন্ম দেন নবমিতা। সেই সময় মেদিনীপুরে বাপের বাড়িতে ছিলেন তিনি। মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে মে মাসে ফের ফ্ল্যাটে আসেন নবমিতা। তাঁর স্বামী দেবাশিস প্রতি শনিবার ফ্ল্যাটে আসেন।
কয়েক মাস আগে পরিচারিকা কল্পনার আচরণে সন্দেহ হয় তাঁদের। তারপরই ওই দম্পতি পরিচারিকার অলক্ষ্যে ফ্ল্যাটে সিসিটিভি লাগান। বৃহস্পতিবার দুপুরে নবমিতার স্বামী দেবাশিস মেয়েকে দেখার জন্য বাঁকুড়া থেকে নিজের মোবাইলে অনলাইনে সিসিটিভি ফুটেজ (CCTV Footage) দেখেন। সেই সময় দেবাশিস দেখতে পান ওই পরিচারিকা তাঁর একরত্তি শিশুকে আছড়ে ফেলে দিচ্ছে। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই পরিচারিকা কখনও শিশুটির পা ধরে বিছানার উপর আছড়ে ফেলে দিচ্ছে। কখনও আবার পিঠে কিল মারছে।
এরপরই দেবাশিসবাবু স্ত্রীকে পুরো বিষয়টি জানান। নবমিতা সেই সময় কাঁথিতে ছিলেন। পরে দেবাশিসবাবুও বাড়ি ফিরে আসেন। তারপরই শুক্রবার পাঁশকুড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই দম্পতি। অভিযুক্ত পরিচারিকাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শিশুকন্যাটি অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। পরিচারিকার কীর্তিতে হতবাক শিশুর মা। কর্মক্ষেত্রে শিশুদের রাখার বন্দোবস্ত করা অত্যন্ত প্রয়োজন বলেই দাবি তাঁর। পরিচারিকার (Maidservant) কঠোরতম শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।