এই প্রথম বিশ্বের বাজারে আসতে চলেছে মশাবাহিত ভয়ঙ্কর সংক্রামক রোগ ম্যালেরিয়ার টিকা। ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারক সংস্থা ‘গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন’-এর বানানো বিশ্বের প্রথম ম্যালেরিয়ার টিকা বুধবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (‘হু’)-র অনুমোদন পেয়েছে। হু-র তরফে টুইট করে জানানো হয়েছে, এই টিকা প্রাথমিক ভাবে গোটা আফ্রিকা মহাদেশের শিশুদের দেওয়া হবে।
মশাবাহিত রোগে প্রতি বছর চার লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়। ২০১৯ সাল থেকে ঘানা, কেনিয়া এবং মালাউইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে যে কর্মসূচি চলছিল, তার ফলাফল পর্যবেক্ষণের পর আরটিএস, এস/এএস০১ টিকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবুজ সংকেত দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সেই ‘পাইলট প্রজেক্টের’ আওতায় ২০ লক্ষের বেশি টিকার ডোজ প্রদান করা হয়েছে।
টিকাটি ১৯৮৭ সালে প্রথম তৈরি করেছিল ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা জিএসকে। এমনিতে ব্যাকটেরিয়াকে দমন করতে প্রচুর টিকা আছে। কিন্তু এই প্রথম বড় আকারে ‘হিউম্যান প্যারাসাইট’ অর্থাৎ মানবদেহে বিস্তারকারী প্যারাসাইটের টিকা ব্যবহারের অনুমোদন দিল হু। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এই টিকাকে এত দিন হু স্বীকৃতি দিতে রাজি হয়নি ব্যবহারের ক্ষেত্রে তার কয়েকটি জটিলতা থাকায়। তার মধ্যে অন্যতম এই টিকা ছিল চারটি পর্বের। তা ছাড়াও নেওয়ার কয়েক মাস পরেই সংক্রমণ রোখার ব্যাপারে এই টিকা আর কার্যকর হত না। পরে সেই সব সমস্যা কাটিয়ে ওঠে এই টিকা। ২০১৯ সালে হু-র তত্ত্বাবধানে ঘানা, কেনিয়া ও মালাউয়িতে শিশুদের দেওয়া ২৩ লক্ষ টিকা যথেষ্টই কার্যকর হয়েছিল।
এক বিবৃতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, “সাব-সাহারান আফ্রিকা-সহ বিশ্বের যে সব এলাকায় ম্যালেরিয়ার মাঝারি থেকে উচ্চ পর্যায়ের সংক্রমণ হয়, সেখানে ব্যবহার করা যাবে আরটিএস, এস/এএস০১ টিকা।”
এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে হু-এর বিশ্বব্যাপী ম্যালেরিয়া কর্মসূচির অধিকর্তা পেদ্রো আলন্সো বলেছেন, “বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে এটা যুগান্তকারী বিষয়।” বিশেষত যে ম্যালেরিয়ার কারণে বিশ্বে প্রতি দু’মিনিটে একটি করে শিশুর মৃত্যু হয়। তবে ঐতিহাসিক দিনে সাফল্য উদযাপনের পাশাপাশি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জের অর্থের জোগান। কারণ, অর্থের অভাবে এই ম্যালেরিয়া টিকা আফ্রিকার শিশুদের কাছে অন্তরায় হতে পারে।