পাঁচ বছর ধরে মামলা লড়ে মাইকে আজান দেওয়ার অধিকার ফিরে পেলেন মুসলিমরা। ঘটনাটি ঘটেছে জার্মানির উত্তর রাইন-ওয়েস্টফালিয়া প্রদেশের ওয়ের-এরকেন্সউইক শহরে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে খুশির আমেজ স্থানীয় তুর্কিস ইসলামিক সম্প্রদায়ের ‘দিতিব (Ditib)’ জনগোষ্ঠীর মানুষদের মনে। যদিও অন্য ধর্মের মানুষদের মধ্যে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে দিতিব জনগোষ্ঠীর মানুষ স্থানীয় এক মসজিদে মাইকে (loudspeaker) আজান দেওয়ার মাধ্যমে অন্যদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করছে এই অভিযোগ ওঠে। ওয়ের-এরকেন্সউইক (Oer-Erkenschwick) শহরের প্রশাসনের কাছে অন্যদের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘনের হচ্ছে বলে এটা বন্ধ করার আবেদনও জানানো হয়। এরপরই তুর্কিস ইসলামিক সম্প্রদায়ের মানুষদের দুপুর ১২ থেকে ২টোর মধ্যে মাত্র ১৫ মিনিট মসজিদের মাইক ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিল প্রশাসন।
আরও পড়ুন : পরপর ৩ বিস্ফোরণ, দাউদাউ করে জ্বলছে সুরাতের ONGC প্ল্যান্ট
মসজিদ থেকে ৯০০ মিটার দূরে বসবাসকারী এক দম্পতি প্রশাসনের ওই অনুমোদনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল। ওই দম্পতির অভিযোগ ছিল, মাইকে আজান দেওয়ার কারণে তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হচ্ছে। ওই মামলার ভিত্তিতে দিতিব জনগোষ্ঠীর ওই মসজিদে আজান দেওয়ার উপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়।
২০১৮ সালে নিম্ন আদালত ওই অভিযোগের ভিত্তিতে রায় দিয়েছিল যে, মসজিদে লাউড স্পিকারে আজান দেওয়া যাবে না। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে স্থানীয় মুসলিম সংগঠন উচ্চ আদালতে গিয়েছিল। বুধবার উচ্চ আদালত জানিয়েছে, আজান দেওয়া অন্যের ধর্মীয় অধিকারে কখনোই হস্তক্ষেপ হতে পারে না। ফলে সপ্তাহে একদিন মসজিদে আজান দেওয়া হতেই পারে। শুধু তাই নয়, আগে ওই মসজিদে সপ্তাহে একদিন ২ মিনিট ধরে আজান দেওয়া হতো। আদালত জানিয়েছে, ১৫ মিনিট ধরে সেখানে আজান দেওয়া যাবে।
বুধবার সেই মামলার শুনানিতে মামলাকারী দম্পতির আবেদন খারিজ করে দিয়ে দিতিব সম্প্রদায়ের মানুষদের মাইকে আজান দেওয়ার অনুমতি দেয় আদালত।আদালতের তরফে জানানো হয়, প্রত্যেক ধর্মের মানুষকেই মেনে নিতে হবে যে অন্যরাও তাঁদের ধর্মীয় আচরণ পালন করবেন। যতক্ষণ পর্যন্ত না অন্যদের ওই ধর্মীয় আচরণ মানতে বাধ্য করা হচ্ছে ততক্ষণ অভিযোগ করার কোনও সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন : প্রয়াত আরও এক কোভিড যোদ্ধা, চলে গেলেন হরিদেবপুর থানার এএসআই