নয়াদিল্লি: কেউ জ্বর, সর্দি-কাশির ওষুধ কিনলেই ক্রেতার নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর নথিভুক্ত করে রাখতে হবে। ওষুধের দোকানগুলিকে এই নির্দেশ দিয়েছে তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার ও মহারাষ্ট্র সরকার।
রোগী করোনা আক্রান্ত কিনা তা জানতেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রক ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, কোনও রোগী জ্বর, সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে গেলেই তাঁর নমুনা পরীক্ষা হবে।
বহু মানুষ প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ কিনছেন। করোনার উপসর্গ জ্বর, সর্দি-কাশি হলেই প্যারাসিটামল খাচ্ছেন। মনে করা হচ্ছে, করোনা পরীক্ষা ও কোয়ারেন্টাইনে যাওয়া এড়াতেই মানুষের এই পদক্ষেপ। এছাড়া রয়েছে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হওয়ার ভয়। ইতিমধ্যেই তেলেঙ্গানায় এমন বহু করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে যাঁরা প্রথমে নিজে থেকেই জ্বরের ওষুধ খেযেছিলেন। পরে, পরীক্ষায় পজেটিভ ধরা পড়ে। এই ধরনের ঘটনা এড়াতেই চার রাজ্যে ওষুধের দোকানগুলিকেবিশেষ এই নির্দেশ দিয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ভাইরাস ছড়িয়ে থাকলে শাস্তি পেতে হবে’, চিনকে হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের
জানা গিয়েছে, প্রত্যেকদিন এই তথ্য সংগ্রহ করবে প্রশাসন। তার ভিত্তিতেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে খতিয়ে দেখা হবে, প্রয়োজনে করোনা পরীক্ষা হবে। তেলেঙ্গার পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের তরফে সব পুরসভার কমিশনার ও অতিরিক্ত কালেক্টরেটের কাছে প্রেরিত নির্দেশে উল্লেখ, ‘প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ যাঁরা কিনছেন সেইসব ক্রেতার নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর যেন সব ওষুধের দোকান, ওষুধ প্রস্ততকারী ও সশ্লিষ্ট সব ব্যক্তি ও সংস্থা যেন রেকর্ড করে রাখে। অবলম্বে এই নির্দেশ তাঁদের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। প্রয়োজনে যেন বিক্রেতারাই ক্রেতাদের সচেতন করে বলেন করোনা পরীক্ষার কথা।’ অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ইতিমধ্যেই কোভিড-১৯ কন্ট্রোল রুম খুলেছে। কন্ট্রোল রুম দু’জন চিকিথসক রয়েছেন। যেসব রোগীর উপসর্গ রয়েছে অথচ পরীক্ষা করানোর ক্ষেত্রে বিভ্রান্ত- তাদের এই চিকিৎসকরা সহায়তা করছেন।
মহারাষ্ট্র করোনা বিধ্বস্ত। পুনেতে এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। প্রত্যেকদিন রাত ৮টায় হোয়াটসঅ্যাপে ক্রেতাদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। নির্দেশিকা না মানলে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারির কথা বলা হয়েছে। বিহারে সিওয়ান, মুঙ্গেরস বেগুসরাই ও নওয়াদা হটস্পট বলে চিহ্নিত। করোনার প্রকোপ রুখতে তাই নির্দেশিকা জারি করেছে প্রশাসন।
সমস্যা হল, এখানে বহু মানুষ করোনা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রশ্ন উঠতে পারে তাতে ওই মানুষের লাভ কি। আসলে যেহেতু এর ওষুধ নেই এবং ভারতে এর মৃত্যু সংখ্যা কম, সেকারণেই সম্ভবত এমন মানসিকতা কাজ করছে। তারা ভাবছে পরীক্ষা করতে গিয়ে কোয়ারেন্টাইনের চক্করে না পড়তে হয়। কিন্তু তারা যা বুঝছেনা তা হল এই অসুখে হয়তো তিনি অসুস্থ হলেন না , কিন্তু তিনি তা ছড়িয়ে দিতে পারেন বহু মাংসের মধ্যে। এইভাবে এই অসুখ দেশজুড়ে একটা স্থায়ী ছাউনি পেয়ে যাবে। যখন কারো হাতে ভ্যাকসিন নেই, তখন সাবধানতাই একমাত্র উপায়। সে কারণেই এমন কড়াকড়ি শুরু হয়েছে। রোগী করোনা আক্রান্ত কিনা তা জানতেই এই পদক্ষেপ বলে জানানো হয়েছে তেলেঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার ও মহারাষ্ট্র সরকারের তরফে।
আরও পড়ুন: এক দিনে পজিটিভ ১৩২৯, দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়াল ১৫ হাজার, মৃত বেড়ে ৫০৭