কলকাতায় নেমে সংক্ষিপ্ত একটি টুইট। তাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্পষ্ট করে দিলেন, আগামী বছর বিধানসভা ভোটে বাঙালি আবেগকে হাতিয়ার করতে কোনও কসুর ছাড়বে না বিজেপি। ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায় লেখেন, ‘কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মতো মহামানবের এই পুণ্যভূমিকে আমি শতকোটি প্রণাম জানাই।’
একগুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে শুক্রবার মধ্যরাতের পর কলকাতায় পৌঁছান শাহ। যদিও সফরের শুরুতেই হোঁচট খান। ঘন কুয়াশার কারণে দিল্লিতে দৃশ্যমানতা অত্যধিক কমে গিয়েছিল। তার জেরে নির্ধারিত সময় বিমান ছাড়তে পারেননি। রাত ১১ টা ৩০ মিনিট নাগাদ পৌঁছানোর কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত রাত ১ টা ৩০ মিনিট নাগাদ কলকাতায় অবতরণ করেন। বিমানবন্দরে তাঁকে স্বাগত জানান বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যে বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়রা। সেখান থেকে নিউটাউনের পাঁচতারা হোটেলের দিকে রওনা দেন।
Reached Kolkata!
I bow to this revered land of greats like Gurudev Tagore, Ishwar Chandra Vidyasagar & Syama Prasad Mookerjee.
কলকাতায় পৌঁছালাম।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মত মহামানবের এই পুণ্য ভূমিকে আমি শতকোটি প্রণাম জানাই pic.twitter.com/rEGSjc87Rk— Amit Shah (@AmitShah) December 18, 2020
দু’দিনের সঙ্গে সফরে সেই হোটেলেই থাকবেন শাহ। শনিবার সকাল ৯ টা ৪৫ মিনিটে জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার (এনআইএ) কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক হবে। আধ ঘণ্টার বৈঠক শেষ উত্তর কলকাতায় সিমলা স্ট্রিটে স্বামী বিবেকানন্দের পৈতৃক বাড়িতে যাবেন। সেখান থেকে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে কপ্টারে মেদিনীপুরে পাড়ি দেবেন। মেদিনীপুরে পৌঁছে সিদ্ধেশ্বরী মন্দিরে পুজো দেবেন। তারপর শহিদ ক্ষুদিরামের মূর্তি উন্মোচন করে যাবেন মহামায়া মন্দিরে। সেখানে মিনিট ১৫-২০ থাকবেন। এক কৃষক পরিবারে মধ্যাহ্নভোজ সেরে দুপুর ২ টো ৩০ মিনিট থেকে মেদিনীপুরের কলেজ ময়দানে জনসভা করবেন শাহ।
আরও পড়ুন: নেতা বানান তিনি, কর্মীরাই সম্পদ, কোর বৈঠকে বার্তা দিদির, সহমত তৃণমূল সমর্থকরাও
বিজেপি সূত্রে খবর, অমিত শাহর এই জনসভা বদলে দিতে চলেছে বঙ্গ রাজনীতির সমীকরণ। সব পরিকল্পনামাফিক এগোলে এই সভাতেই বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেবেন বাংলায় রাজনীতির অন্যতম ‘ফ্যাক্টর’ শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তাঁর সঙ্গেই পদ্মশিবিরে যোগ দেওয়ার কথা শাসকদলের আরও বেশ কয়েকজন বিধায়কের।
যদিও শুভেন্দুর বিজেপিতে যোগদান এক প্রকার স্পষ্ট হয়ে গেলেও আর কারা এদিন পদ্মাসনে বসবেন তা এখনও নিশ্চিত করে বলা কঠিন। শুক্রবার সন্ধেয় যা হয়ে গেল তার পর তো এমনটা বলাই যায়। বিকেল পর্যন্ত খবর ছিল ব্যারাকপুরের বিধায়ক শীলভদ্র দত্ত, উত্তর কাঁথির বিধায়ক বনশ্রী মাইতি, পশ্চিম বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র তিওয়ারি, সাংসদ সুনীল মণ্ডল, কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুরা শুভেন্দুর পথেই হাঁটবেন। রাতে আচমকাই পালা বদল।
দক্ষিণ কলকাতার সুরুচি সঙ্ঘে অরূপ বিশ্বাসের সঙ্গে গোপন বৈঠক সারলেন জিতেন্দ্র। রাতেই জানালেন, “আমি তৃণমূলে ছিলাম, তৃণমূলে আছি।” আরও কিছু পরেই সৌগত রায় জানালেন কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুও দলেই থাকছেন। কোথাও যাচ্ছেন না। শুভেন্দুকে ‘আশ্বস্ত’ করেও এরকম আরও কেউ এদিন পিছু হঠেন কি না শুক্রবারের ঘটনার পর সেটা একটা বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনটা হলে শুভেন্দুর জন্যও যে তা খুবই অস্বস্তির তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
আরও পড়ুন: মর্মান্তিক! ছাদ থেকে পরে যাচ্ছিল মেয়ে, বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ দিলেন বাবা