একসময় পরিচিত ছিল মেয়রের এলাকা বলে। কিন্তু গত সাড়ে পাঁচ-ছ’বছরে বদলে গিয়েছে পরিস্থিতি। মেয়র পদ অনেকদিন আগেই ছেড়ে দিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। ছেড়েছেন বেহালাও। তবে এই কয়েক বছরে এবার নিজের জায়গাটা আরও বেশি করে পরিপক্ক করেছেন রত্না চট্টোপাধ্যায়। তার ফল প্রকাশিত হল কলকাতা পুরভোটের নির্বাচনের ফলাফলেই। শোভন চট্টোপাধ্যায়ের থেকে প্রায় চার হাজার বেশি ভোটে জিতলেন রত্না।
গণনার প্রথম রাউন্ড থেকেই বেহালার ১৩১ নম্বর ওয়ার্ডে এগিয়ে ছিলেন তৃণমূল প্রার্থী রত্না চট্টোপাধ্যায়। নিজের জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন রত্না। এদিন জয়ের পর রত্না বলেন, “শোভনবাবুর থেকে বেশি ভোটে জিতলাম।” তিনি বলেন, “১৩১ ওয়ার্ডের মানুষ আমাকে বিশ্বাস করেছেন। ২০১৫ সালে শোভন চট্টোপাধ্যায় ৬ হাজার ২০০ ভোটে জিতেছিল। সেখানে আমি ১০ হাজার ২০৬ ভোটে জিতেছি। এটা মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতা। গত চার বছরে আমি ওঁদের পাশে ছিলাম। এবার একটা দিন ওঁরা আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন। আমি আজ ভীষণ খুশি। ১৩১ নম্বর ওয়ার্ড, যেখানে আমার বাড়ি, সেটা আমার নিজের দখলে রাখতে পারলাম।”
আরও পড়ুন: ভোট অশান্তিতে তৃণমূল জড়িত প্রমাণ দিলে ২৪ ঘণ্টায় ব্যবস্থা, আশ্বাস অভিষেকের
রত্নার এই জয় নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শোভন-বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, ‘‘উনি পৌরমাতা হয়েছেন, সে ঠিক আছে। কিন্তু আমাদের বাড়িটা ছাড়ুন।’’ রত্না পর্ণশ্রীর ১৩৯ ডি/৪ মহারানি ইন্দিরা দেবী রোডের বাড়িটি না ছাড়লে এ বার তিনি মামলা করবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিলেন বৈশাখী।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর জানা যায়, বৈশাখীকে নিজের পর্ণশ্রীর বাড়িটি বিক্রি করে দিয়েছেন শোভন। সেই সময় বৈশাখী জানিয়েছিলেন, শোভনের পর্ণশ্রীর বাড়ির স্বত্বও হাতে পেয়ে গিয়েছেন তিনি। ওই বাড়িটির বর্তমান মালিক তিনিই। এ-ও জানান, বিভিন্ন মামলার আইনি খরচ চালাতে সমস্যা হচ্ছিল শোভনের। তাই বান্ধবী হিসেবে শোভনকে সাহায্য করতে চেয়েছিলেন তিনি। শোভন তাঁর দু’টি বাড়ির মধ্যে একটি বিক্রি করতে চাওয়ায় বন্ধু হিসেবেই তিনি কলকাতার প্রাক্তন মেয়রের কাছ থেকে বাড়িটি কিনেছেন।
২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বেহালার বাড়ি ছেড়ে গোলপার্কের এক বহুতলে এসে ওঠেন শোভন। সেই থেকে আর পর্ণশ্রীর বাড়িতে যাননি তিনি। কিন্তু এখন শোভন ওই বাড়িতেই ফিরতে চান বলে জানালেন বৈশাখী। মঙ্গলবার ফের রত্নাকে পর্ণশ্রীর বাড়ি ছাড়তে বলে শোভন-বান্ধবী বলেন, ‘‘আমি চাই বেহালার ছেলে শোভন চট্টোপাধ্যায় স্বমহিমায় নিজের বাড়িতে ফিরুন। বাড়ি না ছাড়লে এর পর মামলা করতে বাধ্য হব।’’