নারদ কেলেঙ্কারি তদন্ত ঘিরে তুলকালাম কাণ্ড বাংলায়। সোমবার সকাল-সকালই নারদ মামলায় গ্রেফতার করা হল রাজ্যের নতুন সরকারের পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim), পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় (Subrata Mukherjee), তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra) ও প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে (Sovan Chatterjee)। আর নারদ তদন্তে CBI-এর এই গ্রেফতারির পরই মুখ খুলেছেন নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েল (Mathew Samuel)। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও তাঁর থেকে টাকা নিয়েছিলেন, তা সত্ত্বেও তাঁকে কেন গ্রেফতার করা হল না?
আরও পড়ুন : ৬ ঘণ্টা নিজাম প্যালেসে কাটিয়ে বেরোলেন মমতা, কনভয় গেল নবান্নর দিকে
ম্যাথুর কথায়, ‘নারদ কাণ্ডের বিচার পেতে অনেকটা সময় লেগে গেল ঠিকই, কিন্তু, শেষমেশ বিচার হল। তবে, চারজনকে গ্রেফতার করা হলেও শুভেন্দু অধিকারীও তো আমার থেকে টাকা নিয়েছেন। সেটা রেকর্ড করাও হয়েছিল। তা সত্ত্বেও তাঁকে গ্রেফতার করা হল না কেন? সকলের জন্যই একই বিচার হওয়া দরকার।’ একই প্রশ্ন উঠেছে অপর বিজেপি নেতা মুকুল রায়কে ঘিরেও।
তৃণমূলের তরফেও বিজেপির বিরুদ্ধে প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগের পাশাপাশি শুভেন্দু-মুকুলদের গ্রেফতারির দাবি তোলা হয়েছে। সিবিআইয়ের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, যে সময়ে নারদা কাণ্ডের অভিযোগ উঠেছিল, তখন সাংসদ পদে ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী এবং মুকুল রায়। শুভেন্দু ছিলেন লোকসভায়, আর মুকুল রাজ্যসভায়। তাই তাঁদের গ্রেফতার করতে লোকসভার অধ্যক্ষ এবং রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের অনুমতি প্রয়োজন৷ কিন্তু সেই অনুমতি এখনও মেলেনি৷ সেই কারণেই ওই দুই নেতার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি৷
নিয়ম মতো, রাজ্যের মন্ত্রী, বিধায়কদের গ্রেফতারির ক্ষেত্রে বিধানসভার অধ্যক্ষের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু ফিরহাদ, মদনদের গ্রেফতারির ক্ষেত্রে তা করা হয়নি। অনুমোদন দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়দের যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণভাবে বেআইনি। কলকাতা হাইকোর্ট আমাদের কাছে জানতে চেয়েছিল, কাউকে গ্রেফতার করার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়েছে কিনা। সেখানেই আমরা জানিয়েছিলাম, আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ নেই। আমাকে কোনও চিঠিও দেওয়া হয়নি। এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি।’ রাজ্যপালের অনুমোদনের প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘হাইকোর্ট যখন স্পিকারের অনুমতি নিতে বলছে, সেখানে আশ্চর্যজনকভাবে রাজ্যপাল চার্জশিটের অনুমতি দিয়ে দিলেন। অথচ তিনি যখন এই কাজ করলেন, তখন আমি স্পিকার পদে বর্তমান রয়েছি। তাই আমার অনুমতি না নিয়ে যেভাবে রাজ্যপালের অনুমতি নেওয়া হল, তা সম্পূর্ণ বেআইনি।’
যদিও শুভেন্দু-মুকুলদের বিষয়ে বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভাপতি রাহুল সিনহা বলেন, ‘এটা সিবিআই-এর বিষয়। এর মধ্যে বিজেপি নেই। আইন আইনের পথে চলবে।’
আরও পড়ুন : COVID CONTROVERSY: মোদীকে ‘উলঙ্গ রাজা’ বলে বিজেপি-র ট্রোল বাহিনীর শিকার গুজরাতের কবি