ছত্তীসগঢ়ে মাওবাদীদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় যৌথ বাহিনীর এনকাউন্টারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হল ২২। রবিবার সকালে জঙ্গলের ভিতর থেকে ১৭ জন জওয়ানের দেহ উদ্ধার হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে। বিজাপুরের পুলিশ সুপার জানান, শনিবার দুপুরে তারেম অঞ্চলের জঙ্গলে মাওবাদীদের খোঁজে যৌথ বাহিনী যে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল, তাতে শহিদ জওয়ানের সংখ্যা বেড়ে ২২-এ পৌঁছেছে। নিখোঁজ আরও বেশ কয়েকজন।
শনিবার বিজাপুর ও সুকমার মাঝে দক্ষিণ বস্তারের জঙ্গলে মাওবাদীদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়ে অভিযানে নামেন ২ হাজারের বেশি জওয়ান। জঙ্গলের ভিতর মাওবাদীদের সঙ্গে মুখোমুখি হতেই গুলির লড়াই শুরু হয়ে যায়। প্রায় বিকেল ৩টা পর্যন্ত চলে গুলির লড়াই। মাওবাদীদের গুলিতে মৃত্যু হয় জওয়ানদের। নিখোঁজ জওয়ানদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। নিরাপত্তাকর্মীদের গুলিতেও বেশ কয়েক জন মাওবাদীদের মৃত্যু হয়। তবে সে সংখ্যাটা জানা যায়নি।
22 security personnel have lost their lives in the Naxal attack at Sukma-Bijapur in Chhattisgarh, says SP Bijapur, Kamalochan Kashyap
Visuals from the Sukma-Bijapur Naxal attack site pic.twitter.com/C3VvAdvjaN
— ANI (@ANI) April 4, 2021
সিআরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, “মোস্ট ওয়ান্টেড” মাওবাদী নেত্রী মাধবী হিদমা ওই জঙ্গলেই উপস্থিত ছিল। মাধবী ২০১৩ সালের ঝিরম ঘাঁটি হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ছত্তিশগড় কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা-সহ ৩০ জন মারা যান সেই মাওবাদী হামলায়।তাঁকে ধরার জন্যই এই অভিযান চালানো হয়েছিল, তবে অতর্কিতেই যৌথ বাহিনীর উপর হামলা করে মাওবাদীরা। প্রাথমিক তল্লাশিতে মাওবাদীদের খোঁজ না মেলায় ক্যাম্পে ফিরে আসছিলেন যৌথ বাহিনীর জওয়ানরা। সেই সময়ই চারদিক থেকে হামলা চালায় জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মাওবাদীরা।আচমকা হামলায় কিছুটা দিশেহারা হয়ে পড়ে বাহিনীর সদস্যরা। গতকাল ৫ জন জওয়ানের মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন: অসমে বিজেপি প্রার্থীর গাড়িতে ইভিএম পাচার, বিরোধীদের প্রতিবাদে উত্তাল এলাকা, চলল গুলিও
#WATCH | On ground visuals from the site of Naxal attack at Sukma-Bijapur border in Chhattisgarh; 22 security personnel have lost their lives in the attack pic.twitter.com/nulO8I2GKn
— ANI (@ANI) April 4, 2021
সেই সময় নিখোঁজ ছিলেন ২০ জনেরও বেশি জওয়ান। আজ সকালে জানা সুকমার জঙ্গল থেকে ১৪টি দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। সময় বাড়তেই জানা যায়, আরও তিনটি দেহ, অর্থাৎ এ দিন মোট ১৭টি দেহ উদ্ধার হয়। গতকালের সংখ্যা মিলিয়ে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২২-এ। এদিন তল্লাশি অভিযানে দেখা যায় জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে ছিড়িয়ে পড়ে রয়েছে সংঘর্ষের চিহ্ন। গাছের নিচে সেনা জওয়ানদের দেহ থেকে শুরু করে গুলি, মর্টার পড়ে থাকতে দেখা যায়। সিআরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকালের হামলায় প্রায় দুই ডজনেরও বেশি অস্ত্র লুট করেছে মাওবাদীরা।
এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং, ছত্তীসগঢ়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল। আজ অমিত শাহ অসম সফর কাটছাঁট করে দিল্লি ফিরেছেন। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেলার সঙ্গে কথা বলেন। পরিস্থিতির সম্পর্কে খোঁজ নেন। অমিত শাহ সিআরপিএফের ডিরেক্টর জেনারেল কুলদীপ সিংকে ছত্তিশগড় গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বলেন। শাহ ছত্তিশগড়ের পরিস্থিতি নিয়ে টুইটও করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গতকাল সন্ধ্যাতেই টুইট করেন। তিনি লেখেন, “এই বীর জওয়ানদের বলিদান কখনও ভোলা যাবে না।” আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।
আরও পড়ুন: পড়ে বাড়ি ফেরার সময় গণধর্ষণ যোগী রাজ্যে, আত্মঘাতী নাবালিকা