উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ বুধবার বিহারের ভোটপ্রচারে এসে জানিয়েছিলেন, অনুপ্রবেশকারীদের দেশ থেকে বার করে দেওয়া হবে। বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার জনসভায় দাঁড়িয়ে যোগীর নাম না করে বিঁধলেন তাঁকে।
বুধবার বিকেলে অরারিয়ায় নির্বাচনী সভায় জেডি(ইউ) সভাপতি নীতীশ বলেন, ‘‘কারা এ সব বিদ্বেষমূলক প্রচার করছে? কে এমন মিথ্যা কথা বলছে? তাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা কার আছে? এমন সাহস কারও হতে পারে না। এখানে সকলেই ভারতের নাগরিক।’’আদিত্যনাথের মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরেই নীতীশ বলেন, ‘‘আমাদের সংস্কৃতি বহুত্ববাদের। সম্প্রীতিক, ঐক্য এবং সৌভ্রাতৃত্বের মাধ্যমেই বিহারের উন্নয়ন সম্ভব।’’
আরও পড়ুন : কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের জেরে আকাশ ছোঁয়া দাম আলু–পেঁয়াজের, নাজেহাল বাংলা
তার কয়েক ঘণ্টা আগেই কাটিহারের একটি জনসভায় আদিত্যনাথ বলেছিলেন, ‘‘মোদীজি (প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী) অনুপ্রবেশ সমস্যার সমাধান করেছেন। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তান, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ থেকে আসা নির্যাতিত হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। আর যারা অনুপ্রবেশ করে দেশের সুরক্ষা বিঘ্নিত করছে তাদের বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্র।’’
প্রসঙ্গত, বিহারে এনআরসি কার্যকর হবে না বলে একাধিক বার প্রকাশ্যে জানিয়েছেন নীতীশ। জানিয়েছেন, অসমে চালু হওয়া ওই পদ্ধতি দেশের অন্য কোনও রাজ্যে কার্যকরের চেষ্টা হলে তিনি বিরোধিতা করবেন। এমনকি, সংসদে তাঁর দলের সাংসদেরা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সমর্থন করলেও পরে বিষয়টি নিয়ে ‘ধীরে চলো’র ইঙ্গিত দেন তিনি।
আসলে যোগী আদিত্যনাথের মত ‘বিদ্বেষী’ বিজেপি নেতা বিভাজন ছাড়া অন্য কথা বলতে পারেন না। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিদ্বেষেরই অনুশীলন করে আসছেন। যেকোনও বিষয়কে তিনি ‘হিন্দু-মুসলিম’ দুই ভাগে ভাগ করে মুসলিমদের বাপান্ত করতে পারেন। তাঁর কাছে কাজ চাইলে তিনি মুঘলদের গালাগালি করেন। সম্যসার কথা শোনালে রামের স্ট্যাচু নির্মাণের কথা বলেন। মুসলিম নামাঙ্কিত সৌধ ও রাস্তার নাম বদলে ফেলে তিনি তাঁর মত মানসিকতার হিন্দুদের কাছে বাহবা কুড়োনোর চেষ্টা করেন। যেখানে মুসলিম ভোট পাশা পাল্টে দিতে পারে, সেখানে যোগীর মত লোকের ভাষণ আসলে আত্মঘাতী। তা নীতিশ জানেন। কিন্তু তাতে যোগীর কিছু আসে-যায় না। কারণ যোগী হিন্দুত্ব মতান্তরে ‘বিদ্বেষের’ পোস্টের বয়।
আরও পড়ুন : অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারদের পেনশন কাটছাঁটের পরিকল্পনা করছে মোদী সরকার !