আমফানের ভয়াল স্মৃতি উসকে দিয়ে পুদুচেরির কাছে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় নিভার। কেন্দ্রীয় আবহবিজ্ঞান বিভাগের তরফে ঝড়ের গতিবিধি নিয়ে রাত ৩টে ৪৫ মিনিটে বুলেটিন প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে রাত ২টো ৩০ মিনিট নাগাদ পুদুচেরির কাছাকাছি উপকূলবর্তী এলাকায় সপাটে ধাক্কা মারে নিভার। তার ঝাপটা লেগেছে তামিলনাড়ুর উপকূলেও। এ দিন সকাল থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে চেন্নাই, পুদুচেরি, কাড্ডালোর-সহ বিভিন্ন এলাকায়। নিভারের দাপটে বৃষ্টির তেজ আরও বেড়েছে। সঙ্গী ঝড়ও।
সেই অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের স্থলভূমিতে প্রবেশের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার ফলে ঝড়ের গতিবেগ আরও বেড়েছে। তামিলনাড়ুর মহাবলীপুরম, চেন্নাই-সহ বিভিন্ন প্রান্তে ঝোড়া হাওয়া বইছে। বেড়েছে বৃষ্টির তীব্রতা। উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। চেন্নাই এবং জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে যাওয়ার খবর মিলেছে। তার জেরে ব্যাহত হয়েছে বিদ্যুত্ পরিষেবা। রাস্তায় হাঁটু-সমান জল জমে গিয়েছে। নীচু এলাকার ঘরগুলিতে জল ঢুকেছে। একই অবস্থা পুদুচেরিতেও। সেখানেও ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে।
Flooded marina ?#NivarCyclone pic.twitter.com/d7m1wRdHgN
— PkPraveen ? (@pk_views) November 25, 2020
আরও পড়ুন: প্রিয়ঙ্কা-সালামাত হিন্দু-মুসলমান নয়, সঙ্গী পছন্দ করা মৌলিক অধিকার : এলাহাবাদ হাইকোর্ট
জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের (এনডিআরএফ) তরফে জানানো হয়েছে, সন্ধ্যা পর্যন্ত তামিলনাড়ুতে এক লাখের বেশি মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত ৫২৫ শিশু-সহ চেন্নাইয়ে ২,৭০৭ জনকে সরিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। জরুরি প্রয়োজনের জন্য উপকূলবর্তী সাত জেলায় ৪৬৫ টি সরকার অ্যাম্বুলেন্স তৈরি রাখা হয়েছে। পুদুচেরিতে ২৮৫ টি ত্রাণ শিবিরে ২,২৫০ জনকে রাখা হয়েছে। তবে মৌসম ভবনের অধিকর্তা ওয়াই ই এ রাজ বলেছেন, ‘এই ঘূর্ণিঝড়ের ফলে হয়তো বেশি ক্ষয়ক্ষতি হবে না। কিন্তু তার প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে।’
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বুধবার সকাল সাড়ে আটটা থেকে রাত সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত কুড্ডালোরে ২২৭ মিলিমিটার, পুদুচেরিতে ১৮৭ মিলিমিটার, চেন্নাইয়ে ৮৯ মিলিমিটার, করাইকালে ৮৪ মিলিমিটার এবং নাগাপট্টনমে ৬২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রবল বর্ষণের জেরে সন্ধ্যা ছ’টার পর চেম্মাবারামাক্কাম জলাধার থেকে বাড়তি ৫,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে। দুপুরেও ১,০০০ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছিল। তামিলনাড়ু প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, জলের মাত্রা বাড়লে নিয়ন্ত্রিতভাবে আরও জল ছাড়া হতে পারে।
অন্যদিকে, স্থলভূমিতে পুরোপুরি প্রবেশের প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাওয়ার মোটামুটি ছ’ঘণ্টা পর্যন্ত তামিলনাডু়র রানিপেট, তীরুভান্নামালাই, তিরুপাত্তুর, ভেলোর, অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর, কুর্নুল, প্রকাশম, কুড়াপ্পা এবং পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ-পূর্ব তেলাঙ্গানায় অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে।
আরও পড়ুন: দীর্ঘ লড়াই শেষ, প্রয়াত অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, শোকপ্রকাশ মোদীর