পঞ্চায়েত নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশে মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। রামরাজ্যের কাসুন্দি ঘেঁটে শেষ রক্ষা করতে পারেনি পদ্মবাহিনী। তবে কি এ বার সরযূর তীরেওবদলের হাওয়া? অযোধ্যায় গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন অন্তত তেমনটাই ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ সেখানে এ বার সংখ্যাগরিষ্ঠের সো,মথন পেয়ে গ্রামপ্রধান নির্বাচিত হলেন হাফেজ আজিমউদ্দিন।
অযোধ্যা বিধানসভা কেন্দ্রের রুদৌলী তহসিলের অন্তর্গত রাজনপুরের ঘটনা। ছয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে পিছনে ফেলে, ৬০০ ভোটের মধ্যে ২০০ পেয়ে পঞ্চায়েতে নির্বাচিত হলেন স্থানীয় হাফেজ (কুরআন যাঁর মুখস্থ ) আজিমউদ্দিন। নিজের জয়কে ঈদের উপহার হিসেবেই দেখছেন হাফিজ। একই সঙ্গে এই নির্বাচনকে শান্তি এবং সৌভ্রাত্বের বার্তা হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রাও।
আরো পড়ুন: আক্রান্ত মানিক সরকার, ত্রিপুরার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর, অভিযুক্ত BJP
পেশায় কৃষক হাফিজ মূলত দানাশস্য, সব্জি এবং ফল চাষ করেন। উত্তরাধিকার সূত্রে ৫০ বিঘে জমি রয়েছে তাঁর। মাদ্রাসায় ১০ বছর শিক্ষকতাও করেছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দা গিরীশ রাওয়ত বলেন, ‘‘এটা একটা ছোট নির্বাচন হলেও, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিই ফুটে উঠেছে ফলাফলে।’’ শেখর শাহু নামের অন্য এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা ধর্মের নামে ভোট দিইনি। নিজেদের জন্য কী ভাল, তা মাথায় রেখেই ভোট দিয়েছি। আমরা মনে প্রাণে হিন্দু। কিন্তু ধর্ম নিরপেক্ষতার আদর্শই যে আমাদের আদর্শ, তা এই নির্বাচনেই স্পষ্ট।’’বিজেপি-র শাসনকালে হিন্দি বলয়ের রাজ্যগুলির মধ্যে উত্তরপ্রদেশ যদি হিন্দুত্বের প্রভাব সবচেয়ে বেড়ে গিয়ে থাকে, তবে অযোধ্যা তার ভরকেন্দ্র। সেখানে ছোট হলেও এই পরিবর্তন আগামী দিনে রাজ্যের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
ধর্মের কথা বলে যারা বিদ্বেষ ছড়ায়, তাদের মানুষ বেশিদিন বিশ্বাস করে না। বিদ্বেষের পরাজয় শুরু হয়েছে। বাংলা থেকে শুরু হয়েছে এই পরাজয়। দেশের শিক্ষিত মানুষ আগেই বিজেপির ছক বুঝে গিয়েছিল। বিজেপি এখনও টিকে রয়েছে কেবল অশিক্ষিত তফসিলি হিন্দুদের মগজ ধোলাই করে। তাদের মনকে বিদ্বেষমুখী করে। তাদের পরধর্ম অসহিষ্ণু করে। উত্তরপ্রদেশ পঞ্চায়েতের ভোট বুঝিয়ে দিল আসলে মাটি হারাচ্ছে বিজেপি। যে শাসন যোগী সেখানে উপহার দিযেছেন, তাতে মানুষের কাছ থেকে বিজেপি যে প্রবল ধাক্কা খাবে তা নিশ্চিত। এই ভোট ছিল তার নমুনা।
আরো পড়ুন: কোথায় অমিত শাহ? থানায় দায়ের ‘মিসিং ডায়েরি’