দিনভর নাটকই সার! কংগ্রেস সভানেত্রী পদে আপাতত সনিয়া গান্ধীই

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

উত্তেজনা শোরগোল, এবং অবশেষে নেতৃত্ব পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত ছাড়াই ‘সন্ধি’! সনিয়া গান্ধীর উত্তরসূরি খুঁজতে বসে সোমবার এমনই নাটকের সাক্ষী হল কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি। এমনকি, কমিটির সদস্যদের একাংশ সরাসরি সরব হলেন রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত ওয়ার্কিং কমিটির অনুরোধ মেনে অন্তর্বর্তী সভাপতি হিসেবে সনিয়া কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছেন।

বড়সড় উথালপাথাল যে হতে চলেছে তা শনিবার থেকেই আঁচ করা যাচ্ছিল। সোমবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে হলও তাই। কংগ্রেস সভানেত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াতে চাইলেন সনিয়া গান্ধী। স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, যত দ্রুত সম্ভব দল বিকল্প খুঁজে নিক। আর তাঁর পাশে বসে রাহুল গান্ধী জানিয়ে দিলেন, ‘সভানেত্রীর বয়স হয়েছে। তাঁর শরীর ভাল নয়। তিনি এই ভার ৬ মাসের বেশি আর বইতে পারবেন না। সুতরাং যা করার তা ৬ মাসের মধ্যেই করতে হবে।’

এদিন ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকের গোড়াতেই সনিয়া তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়ে দেন। কিন্তু সেই সঙ্গে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন দলের এক শ্রেণীর নেতার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কংগ্রেসের ২৩ জন নেতা সনিয়া গান্ধীকে চিঠি লিখে কংগ্রেসের দিশাহীনতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। সেই চিঠির কথা ফাঁস হয়ে যায়। সেই প্রসঙ্গ টেনেই সনিয়া বলেন, দল এমনিতেই সংকটে ছিল। তার মধ্যে এ ধরনের চিঠি লেখা কি দরকার ছিল। আপনাদের কোন কথা আমি শুনিনি। কী করিনি? এতে কি দলের ভাল হল? সনিয়া কথা শেষ করার আগেই তাঁর পাশে বসে রাহুল বলেন, যাঁরা এই চিঠি লিখেছেন তাঁরা দলের ক্ষতি করেছেন। আমার তো মনে হয় এঁরা বিজেপির সঙ্গে আঁতাঁত করে এসব করেছেন।

আরও পড়ুন: টুইটের জন্য ক্ষমা চাইতে রাজি হলেন না দোষী সাব্যস্ত প্রশান্ত ভূষণ

যে ২৩ জন নেতা সনিয়াকে চিঠি লিখেছিলেন তাঁদের মধ্যে মাত্র তিন জন কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য। এঁরা হলেন, গুলাম নবি আজাদ, আনন্দ শর্মা এবং জিতিন প্রসাদ। রাহুলের এ কথা শুনেই তীব্র আপত্তি জানান, গুলাম নবি। তিনি বলেন, রাহুল যে অভিযোগ করেছেন তা প্রমাণ করুক, আমি ইস্তফা দিয়ে দিচ্ছি। সনিয়াকে চিঠি লিখেছিলেন কপিল সিব্বলও। রাহুল ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে কী বলেছেন, তা পলকের মধ্যেই মিডিয়ায় ফাঁস হয়ে যায়। তার পর সিব্বলও প্রকাশ্যে মন্তব্য করে বলেন, এই অভিযোগ শুনে তিনি হতাশ। গত ত্রিশ বছর ধরে দলের জন্য তিনি কী করেছেন তার ব্যাখ্যা দিতেও নেমে পড়েন কপিল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক থেকেই তাঁকে ফোন করে শান্ত করেন রাহুল।

ওদিকে বৈঠকের মধ্যে মনমোহন-চিদম্বরম বলেন, সনিয়া গান্ধীই দলকে নেতৃত্ব দিন তাতেই কংগ্রেসের মঙ্গল। আবার লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী বলেন, গান্ধী পরিবারের বাইরে কারও দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নেই। রাজীব গান্ধীর মৃত্যুর পর পরীক্ষা নীরিক্ষা করে সে সব দেখা হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেসকে পুনরুজ্জীবিত করেছেন সনিয়াই। এখন রাহুলেরই উচিত সভাপতি পদের দায়িত্ব মেনে নেওয়া। অধীরবাবু বৈঠকে আরও বলেন, ৬ মাস অপেক্ষা করারও দরকার নেই। রাহুল রাজি থাকলে ৬ দিনের মধ্যেই তাঁকে সভাপতি মেনে নিতে দল প্রস্তুত।

যদিও তাতে রা কাটেননি রাহুল। এদিন প্রিয়ঙ্কা গান্ধীও বৈঠকে কোনও মন্তব্য করেননি। পরে বৈঠকের শেষে মনমোহন সিংহই প্রস্তাব দেন, আপাতত ৬ মাস কংগ্রেস সভানেত্রী থাকুন সনিয়া গান্ধী। তার মধ্যে দলের সদস্য অভিযান ও সাংগঠনিক নির্বাচন হোক। তার পর ৬ মাসের মধ্যে সর্বভারতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন ডেকে নতুন সভাপতির অভিষেক হবে। সেই প্রস্তাবে সায় দেন চিদম্বরম। পরে সেটাই সর্বসম্মত প্রস্তাব হিসাবে গৃহীত হয়।

আরও পড়ুন: কপিল সিব্বল, শশী থারুরের মতো নেতা বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন, বিস্ফোরক রাহুল

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest