পরিযায়ী যন্ত্রণা! দুই ছেলেকে বাঁকে বয়ে ১৬০ কিমি হেঁটে বাড়ি ফিরলেন রূপায়া টুডু

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

ময়ূরভঞ্জ: লকডাউনে বাঁকে দুই ছেলেকে বয়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলেন ওডিশার ইটভাটা শ্রমিক রুপায়া টুডু। সাত দিন ধরে মোট ১৬০ কিমি হেঁটে ফিরলেও খাদ্যের অভাবে ধুঁকছে গোটা পরিবার।

ওডিশার ময়ূরভঞ্জের বলডিয়া গ্রাম ছেড়ে যাজপুর জেলার পানিকোইনি গ্রামের এক ইটভাটায় কাজ করতে গিয়েছিলেন জনজাতি গোষ্ঠীর সদস্য রুপায়া। সঙ্গে নিয়েছিলেন স্ত্রী মাতৃকা, ৬ বটিছরের মেয়ে পুষ্পাঞ্জলি এবং ৪ ও আড়াই বছর বয়েসি দুই ছেলেকে। 

করোনা সংকে্রমণের জেরে দেশজুড়ে লকডাউন আরোপ করার পরে বন্ধ হয়ে যায় ইটভাটা। বকেয়া বেতন দিতে অস্বীকার করেন ভাটার মালিকও। এই পরিস্থিতিতে গ্রামের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন রুপায়া। অর্থ ও পরিবহণের অভাবে যাজপুর থেকে ১৬০ কিমি পথ হেঁটেই পাড়ি দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। 

পরিকল্পনা অনুযায়ী শুরু হয় হাঁটা। কিন্তু অল্প দূর হেঁটেই রুপায়া বুঝতে পারেন, এই সুদীর্ঘ পথ হাঁটতে তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে পারলেও ছেলে দু’টির সে ক্ষমতা কুলোবে না। সমস্যার সমাধানে নতুন কৌশল ভাবেন রুপায়া। একটি বাঁশের বাঁক তৈরি করে তার থেকে ঝুলিয়ে দেন একজোড়া ঝুড়ি। তাতে দুই ছেলেকে বসিয়ে হাঁটা শুরু করেন শ্রমিক। এই ভাবে ১২০ কিমি পথ হেঁটে শেষ পর্যন্ত গ্রামে ফেরেন টুডু পরিবার। 

আরও পড়ুন: পরিযায়ীদের সঙ্গে রাহুলের সাক্ষাৎকে ‘ড্রামাবাজি’ বললেন নির্মলা

তবে গ্রামে ফিরেও স্বস্তি পাননি পরিবারের সদস্যরা। সরকারি নিয়ম মেনে তাঁদের ২১ দিন কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে থাকার ব্যবস্থা হয়েছে। সেখান থেকে বাড়ি ফিরে আরও ৭ দিন ঘরবন্দি থাকতে হবে। কিন্তু কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পৌঁছানোর পরে কোনও খাবার ও পানীয় জলের সংস্থান পাননি রুপায়া ও তাঁর পরিবার।  দুই দিন এ ভাবে কাটানোর পরে শনিবার তাঁদের খাবার ও জলের ব্যবস্থা করেন ময়ূরভঞ্জ জেলার বিজেডি সভাপতি দেবাশিস মোহান্তি। খাবার পান সেন্টারে থাকা অন্যান্য শ্রমিক পরিবারের সদস্যরাও। 

সেই ছবিই এখন ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যা দেখে অনেকেরই চোখে জল চলে এসেছে।রূপায়া বলেন, ‘খুব যন্ত্রণা হয়েছে আসতে। কিন্তু সন্তানদের জন্যে এটুকু তো করতেই হবে।’

দিন কয়েক আগে সামনে আসে আরেকটি হৃদয়বিদারক চিত্র। ভিডিয়োতে দেখা যায়, ট্রলির উপরে শুয়ে রয়েছে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া এক শিশু আর তাঁকে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর মা। লকডাউন ঘোষণা হওয়ার পরে ভিনরাজ্য এবং নিজের রাজ্যেরই অন্যান্য জেলা থেকে কেউ ট্রাক বা ভ্যানে চেপে, কেউ সাইকেল চালিয়ে, আবার অনেকে স্রেফ পায়ে হেঁটে নিজেদের গ্রামে ফিরছেন ওডিশার পরিযায়ী শ্রমিকরা। 

আরও পড়ুন: লকডাউনে রোজগার হারিয়ে আত্মঘাতী জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা, অসহায় স্ত্রীর চিৎকার

Gmail 2
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest