বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) নারদ মামলার শুনানি থেকে নিজেক সরিয়ে নিলেন এই বিচারপতি। মঙ্গলবারই নারদ সংক্রান্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) দায়ের করা মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল শীর্ষ আদালতের দুই বিচারপতি – হেমন্ত গুপ্তা ও অনিরুদ্ধ বসুর এজলাসে। কিন্তু দিনের শুরুতেই মামলা শুনানি হওয়ার ঠিক আগেই তা শুনতে গররাজি হন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।
আরও পড়ুন : লোকসভায় শাখা সিঁদুর পরে এসেছিলেন নুসরত, তথ্য তুলে পদ খারিজের দাবি বিজেপি সাংসদের
এর আগে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন বিচারপতি ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুও সেই পথেই হাঁটলেন। আর তাঁর এই পদক্ষেপে নতুন করে বেঞ্চ তৈরি করে মামলার শুনানির প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে খবর।
গত ১৭ মে নারদ মামলায় ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, মদন মিত্র ও শোভন চট্টোপাধ্যায়ের মত চার হেভিওয়েট নেতাকে গ্রেফতার করে সিবিআই। তাঁদের নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরই সেখানে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৬ ঘণ্টা সেখানে বসেছিলেন তিনি। অন্যদিকে আদালতে চার নেতার গ্রেফতারি নিয়ে যখন শুনানি চলছিল, তখন সেখানে হাজির হন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এই দুই ঘটনাকে আদালতে ‘হাতিয়ার’ করে সিবিআই।
Supreme Court judge Justice Aniruddha Bose recuses from hearing pleas in the Narada scam case pic.twitter.com/BYKI3bJ4lp
— ANI (@ANI) June 22, 2021
সিবিআইয়ের বক্তব্য ছিল, দলীয় মন্ত্রী-বিধায়ককে গ্রেফতার করতেই স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সিবিআই দফতরে গিয়ে ধরনায় বসেছেন। তদন্তের ক্ষেত্রে তা যথেষ্ট প্রভাব ফেলার মতো ঘটনা। অন্যদিকে সিবিআইয়ের প্রশ্ন ছিল, আইনমন্ত্রী কী ভাবে আদালতে গিয়ে হাজির হতে পারেন? এরপরই মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীর কাছে হলফনামা চায় হাইকোর্ট। তা তাঁরা পেশও করেন। তবে সময়ের পরে হলফনামা দেওয়া হয়েছে বলে দাবি তুলে তা গ্রহণে অস্বীকার করে হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চ। হলফনামা জমা দিতে দেরি হওয়ায় তা নিতে অস্বীকার করেছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল। সেই হলমনাফা গ্রহণ না করার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন মুখ্যমন্ত্রী।
দিন কয়েক আগে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা (Post poll Violence) নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হওয়া মামলার শুনানিতেও এমনই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এই মামলার শুনানির জন্য তৈরি হওয়া ডিভিশন বেঞ্চের অন্যতম বিচারপতি ছিলেন ইন্দিরা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু শুনানির সময় তিনি জানান যে, তাঁর অনুপস্থিতিতেই যেন তা শোনা হয়। অর্থাৎ শুনানি থেকে অব্য়াহতি চান তিনি। এবার নারদ স্টিং অপারেশনের মতো স্পর্শকাতর, গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিতে চাইলেন আরেক বাঙালি বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।
আরও পড়ুন : সাংগঠনিক দুর্বলতাতেই ভরাডুবি, জোট ধরে রাখার পক্ষে জোর সওয়াল CPM শীর্ষ নেতৃত্বের