দলবিরোধী কাজের অভিযোগে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সম্পাদক কণিষ্ক পণ্ডাকে বহিষ্কার করল তৃণমূল। জেলায় শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত তিনি। রবিবার তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নিয়েও বেসুর গেয়েছিলেন কনিষ্ক। তিনি বলেছিলেন, ‘দিদিকে যতদিন না আমরা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার থেকে সরাতে পারছি ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে এবং ময়দানে দেখা হবে।’ তাই রবিবার তাঁকে দল থেকেই বহিষ্কার করে কড়া বার্তা দিল রাজ্যের শাসকদল।
উল্লেখ্য, ৪ ডিসেম্বর তৃণমূলের জেলা সভাপতিদের সঙ্গে বৈঠক চলাকালীন পূর্ব মেদিনীপুরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শিশির অধিকারীকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন যে পূর্ব মেদিনীপুরে অনেকে দল বিরোধী মন্তব্য করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তার পরও রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প, ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি নিয়ে প্রকাশ্যে কটাক্ষ করেছেন কনিষ্ক। এমনকী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও বিরূপ মন্তব্য শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে।
বলেছিলেন, ‘‘দিদির স্বাস্থ্যসাথী ঢপ। যখন হাসপাতালে নিয়ে যাবেন তাড়িয়ে দেবে। দিদির কাছে কোনও টাকা নেই। দিদির যা ঋণ আছে ঢেকে দিলেও ঋণ শোধ হবে না। বাংলার মানুষ বুঝে গিয়েছেন শুভেন্দুকেই দরকার।’’প্রকাশ্যে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য সরকার সম্পর্কে এমন মন্তব্য করায়, কণিষ্ককে বহিষ্কার যে ছিল নিতান্ত সময়ের অপেক্ষা, তা এক প্রকার নিশ্চিতই ছিল। রবিবার তাঁকে বহিষ্কারের ঘটনায় তাই ‘অবাক’ নন দলীয় নেতৃত্ব।
আরও পড়ুন: ‘বিশ্বভারতী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মস্থান’, বিজেপির টুইটে টিপ্পনি তৃণমূলের
শনিবার কাঁথিতে খোলা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর সহায়তা কেন্দ্র। উল্লেখজনকভাবে ওই দফতরে দেওয়ালের রঙ করা হয়েছে গেরুয়া। সে ব্যাপারে বলতে গিয়েই এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে আক্রমণ করে কনিষ্ক পণ্ডা বলেন, ‘তৃণমূল তো ত্যাগী। সেই ত্যাগ বোঝাতেই গেরুয়া রঙ। রাজনীতি চলতে থাকবে। দিদিকে যতদিন না আমরা মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার থেকে সরাতে পারছি ততদিন পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে এবং ময়দানে দেখা হবে।’
যদিও সংবাদমাধ্যমে এই খবর জানার পর কণিষ্কর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া, ‘‘কুছ পরোয়া নেই। এই দলটাই কিছু দিন পর পোস্টারে পরিণত হবে।’’
আরও পড়ুন: ‘মমতাকে খুন করতে পারে বিজেপি’, ভোটের আগে বিস্ফোরক সুব্রত মুখোপাধ্যায়