প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে হিংসার পুনরাবৃত্তি হোক, তা কোনও পক্ষই চাইছে না। তবে তা সত্ত্বেও শনিবার আন্দোলনকারী কৃষকদের দেশজোড়া ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি ঘিরে উত্তেজনার পারদ চড়ছে আন্দোলনকারী এবং দিল্লি পুলিশ— দুই শিবিরেই। কৃষক ইউনিয়নের নেতাদের আশঙ্কা, তাঁদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি ভণ্ডুল করার জন্য হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করা হতে পারে। অন্য দিকে, বিশ্বের নজরে উঠে আসা এই কর্মসূচি ঘিরে যাতে কোনও রকমের হিংসা না ছড়ায়, সে দিকে লক্ষ্য রাখতে কসুর করছে না দিল্লি পুলিশ। দিল্লির উপকণ্ঠে ৫০ হাজার পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। রয়েছে পর্যাপ্ত জলকামানও।
২৬ জানুয়ারি রাজধানীতে যে হিংসার বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না হয় সেদিকে কড়া নজর রেখেছে প্রশাসন। আর তাই দিল্লির বিভিন্ন সীমান্ত ঘেরাও করা হয়েছে ব্যারিকেড ও কাঁটাতারে। এমনকী লাল কেল্লায় (Red Fort) ব্যাপক পুলিসি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। Delhi Police, Paramilitary ও Reserve Force-এর ৫০ হাজার কর্মী দিল্লির বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন। মোট ১২টি মেট্রো স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় হাই-অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। ওইসব মেট্রো স্টেশনের প্রতিটি গেটে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিস।
Chakka jam: Around 50,000 police, paramilitary forces deployed in Delhi-NCR
Read @ANI Story | https://t.co/6bxN4DIDCu pic.twitter.com/UXlpv131RV
— ANI Digital (@ani_digital) February 6, 2021
থাকছে আইটিবিপি, সিআরপিএফ ও র্যাফ। কোনওরকম অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হলে তা সামাল দিতে তৈরি রাখা হয়েছে বিশেষ SWAT টিম ও NSG। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বম্ব ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে। বিশেষ নজরে বাজার এলাকা, ধর্মীয় স্থান এবং লালকেল্লা, ইন্ডিয়া গেট বা পার্লামেন্টে যাওয়ার রাস্তাগুলির মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। দিনভর কয়েক শো সিসিটিভিতে চলবে নজরদারি। সকাল থেকেই উড়ছে ড্রোন।
Security tightened in Delhi-NCR in view of 'Chakka Jaam' call by farmers; visuals from Loni border (Ghaziabad) where drone is being used to monitor the situation.
Around 50,000 personnel of Delhi Police, Paramilitary & Reserve Forces deployed in Delhi-NCR, as per Delhi Police pic.twitter.com/wikAnHnXLy
— ANI (@ANI) February 6, 2021
শনিবারের ‘চাক্কা জ্যাম’ কর্মসূচি যে শান্তিপূর্ণ করাই তাঁদের লক্ষ্য, তা শুক্রবারই বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে সংযুক্ত কিসান মোর্চা। দেশ জু়ড়ে বেলা ১২টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে সমস্ত জাতীয় এবং রাজ্য সড়কে এই অবরোধ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছে তারা। তবে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং রাজধানী দিল্লি ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলিতে ‘চাক্কা জ্যাম’ করা হবে না বলে জানানো হয়েছে। যদিও দিল্লিমুখী যে সব রাস্তায় মাস দুয়েক ধরে অবরোধ চলছে, সেগুলি ছাড়া বাকি রাস্তা খোলা থাকবে।
এই অবরোধ কর্মসূচির আওতা থেকে অ্যাম্বল্যান্স-সহ সব জরুরি পরিষেবাকে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কী কারণে দিল্লির রাস্তা অবরোধ করা হচ্ছে না, তা জানিয়েছেন ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের সভাপতি রাকেশ টিকায়েত। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লিতে আন্দোলনের জায়গায় ইতিমধ্যেই চাক্কা জ্যামের মতোই অবরোধ রয়েছে। ফলে সেখানে নতুন করে এই কর্মসূচি পালন করার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি, আলোচনার জন্য যে কোনও সময় দিল্লি থেকে ডাক আসতে পারে। তাই রাজধানীর রাস্তা খোলা রাখা হবে।’’
তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কা করছেন রাকেশ। তাঁর কথায়, ‘‘উত্তরপ্রদেশ এবং উত্তরাখণ্ডে হিংসা ছড়ানোর চেষ্টা করতে পারে কিছু মানুষজন। আমাদের কাছে সেই প্রমাণ রয়েছে। সে জন্য ওই রাজ্যগুলিতে চাক্কা জ্যাম করা হবে না।’’
আরও পড়ুন: ১৮ মাস পরে গোটা জম্মু-কাশ্মীর ফিরে পাচ্ছে ৪ জি নেট