সোমবার সকালে হাড় হিম করা দৃশ্য দেখা গেল বিহারে। গঙ্গার ধারে পড়ে রয়েছে শতাধিক মৃত দেহ। আর তাঁদের শরীর ছিঁড়ে খাচ্ছে সারমেয়। ঘটনাটি ঘটেছে বক্সার জেলার চৌসায়। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যাঁদের দেহ মিলেছে, তাঁরা প্রত্যেকেই করোনা আক্রান্ত। যার ফলে রীতিমতো উত্তেজনা ছড়ায় ওই এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে খবর, সকালের দিকে গঙ্গায় ভাসতে দেখা গিয়েছিল ওই দেহগুলিকে। তার পরই সেগুলিকে গঙ্গার ধারে তুলে এনে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। স্থানীয়দের অনুমান, গঙ্গার উল্টো পাড়ে উত্তরপ্রদেশ, ওই দিক দিয়েই ভেসে এসেছে দেহগুলি। কারণ তাঁদের দাবি, এই এলাকায় একসঙ্গে এত মানুষের মৃত্যু হওয়া সম্ভব নয়। আপাতত জেলা প্রশাসনকে গোটা বিষয়টি জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন : বিজেপি সাংসদের ছেলের ডাকে থাইল্যান্ড থেকে আসা যৌনকর্মীর মৃত্যু করোনায়, তরজা তুঙ্গে
বক্সারের এসডিও কেকে উপাধ্যায় বলেন, ‘দূর থেকে ১০-১২টি মৃতদেহ ভেসে আসতে দেখা গিয়েছিল। আপাতত যা বোঝা যাচ্ছে, বিগত ৫-৭ দিনে ধরে সেগুলি জলে ভাসছিল। জলে দেহ ভাসানোর প্রথা আমাদের এখানে নেই। দেহগুলির সৎকারের ব্যবস্থা করছি আমরা।’
নদীতে ভেস আসছে ডজন ডজন মৃতদেহ। শুনতে অবাক লাগলেও এমনই দৃশ্যর সাক্ষী হল উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলা। রবিবার যমুনা নদীতে প্রায় ডজনখানেক লাশ ভেসে আসতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। করোনায় মৃত বেশ গ্রামবাসীদের দেহও ভেসে আসতে দেখেন তাঁরা। ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই উত্তেজনা ছড়ায়।
গ্রামবাসীদের অনেকেরই অভিযোগ, এলাকায় করোনায় মৃতের সংখ্যা অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ার কারণে শ্মশানে চাপ পড়ছে। এই কারণেই মৃতদেহগুলি নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অন্যদিকে স্থানীয়দের অনেকেই আবার জানিয়েছেন, করোনায় কার্যত মড়ক লেগেছে যমুনা নদীর আশেপাশের গ্রামগুলিতে। সেখানে অনেক পরিবারেরই সৎকারের সামর্থ্য নেই। তাই পরিজনদের মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সূত্রের খবর, সরকারি বা বেসরকারিভাবে করোনায় মৃতের সংখ্যার কোনও তথ্যই মেলেনি এই এলাকাগুলোয়।
যদিও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দাবি করেছেন রাজ্যে ভয়াবহতা নেই। অক্সিজেন, বেডও পর্যাপ্ত। এমনকি রোগী মৃত্যুর হারও সামান্য। তবে যোগীর আশ্বাসের পরও এই ছবি কার্যত শিউরে ওঠার মতোই। এদিন ঘটনা চোখে পড়তেই খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
এরপর পুলিশ এসে নদীর তীর থেকে দুটি দেহ উদ্ধার করে। নিয়ে গিয়ে সৎকার করে তারা। ওই দুটি দেহের মধ্যে একটি আধপোড়া দেহ ছিল বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। তবে এই ঘটনায় স্বাস্থ্যবিধি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয়রা। যদিও গ্রামগুলোতে করোনায় মৃত্যুর প্রকোপ বৃদ্ধির বিষয়টি অস্বীকার করেছে স্থানীয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন : স্মৃতিতে নিজামউদ্দিন !করোনায় মৃতদের দেহ সৎকার তবলিগ জামাতের