সকালে আড়মোড়া ভাঙার পর যে জিনিসটা ঠিক হাতের কাছেই চাই, সেটা হল চা। ভারতের বেশিরভাগ মানুষই চা দিয়েই দিনের শুরুটা করেন। সেটা দুধ চা হোক বা লাল চা। কেউ কেউ আবার দিনে কতবার চা খান, তার হিসেবও রাখেন না।নেশা নয়, এ যেন আসলে ভালবাসা। যদিও ডাক্তাররা পরামর্শ দেন চিনি ছাড়া চা খেতে। এতে শরীর মন দুইই চাঙ্গা থাকে। এ হেন জনপ্রিয় পানীয় চায়ের প্রতি আরও আকর্ষণ বাড়াতে ২০০৫ সালে ১৫ ডিসেম্বর থেকে ভারতে পালিত হয় চা দিবস।
ভারতের পর আস্তে আস্তে সারা বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশ এই দিবস পালন করেন। সমীক্ষায় জানা সেই সব দেশের নাগরিকদেরও চায়ের প্রতি আলাদা টান আছে। যেমন বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, কেনিয়া, মালোয়েশিয়া, উগান্ডা প্রভৃতি।
২০১৫ সালে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ইউনাইটেড নেশনস ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনকে প্রস্তাব দেওয়া হয় এই দিনটি পালন করার জন্য। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে তারা এই দিনটি পালন করতে শুরু করেন। তবে ১৫ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ২১ মে পালিত হয় চা দিবস। কারণ ২১ মে থেকেই চায়ের উৎপাদন শুরু হয় বেশিরভাগ দেশে।
আরও পড়ুন: চার নেতার জামিন মঞ্জুর হলেও আপাতত গৃহবন্দি রাখার নির্দেশ, উচ্চতর বেঞ্চে যাবে রাজ্য
চায়ের জন্ম নিয়ে এক ভারি সুন্দর তিব্বতি উপকথার প্রচলন আছে। তিব্বতের রাজকুমার ধর্ম বা জর্ম একদা বসেছিলেন কঠোর তপস্যায়। সেই তপস্যা সার্থক না হওয়ায়, মানুষের উপকারের দৈবী ক্ষমতা অর্জন করতে না পারায় ক্ষোভে তিনি নিজের চোখের দুই পাতা উপড়ে ফেলে দেন! সেই পাতা থেকে দেখতে দেখতে দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির চা-গাছ জন্ম নেয়। জর্মের চোখ এই ভাবে মহান উপকার সাধন করে সভ্যতার, তাকে উপহার দেয় এক স্বাস্থ্যকর পানীয়।
চায়ের গুণমান বৃদ্ধি এবং সারা বিশ্বের চা শ্রমিকদের কথা ভেবেই এই দিনটি পালিত হয় সব জায়গাতে। শুরু থেকেই চায়ের ফলনের দিকে নজর রাখা প্রয়োজন, বিশেষ যত্নের প্রয়োজন। চায়ের প্রতি ভালবাসা থেকেই প্রতিটা সাধারণ মানুষ যাতে এর গুণাবলির বিষয়ে জানতে পারেন সেই কারণেই পালিত হয় চা দিবস। কখনও কখনও চা শ্রমিকদের কাজ চলে যায়, চায়ের গুণমান হারিয়ে যায়, আরও নানা সমস্যার সৃষ্টি হয় সারাবছর ধরেই। সারা বিশ্বে যাতে এই সমস্যার সমাধান হয় তার জন্যেই পালন করা হয় আন্তর্জাতিক চা দিবস।
চায়ের মধ্যে অনেক ঔষধি গুণ আছে। সেকারনেই ডাক্তাররা খেতে পরামর্শ দেন। শরীর সুস্থ রাখতে চিনি ছাড়া চা খেতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। তবে শুধু দুধ চা নয়, আরও বহু রকমের চা কিন্তু এই ভারতেই রয়েছে। কখনও কখনও স্বাদ বদল করতে চাইলে সেই চা-ও বাড়িতে তৈরি করে খেতে পারেন। যেমন কাশ্মীরি কাওয়া চা, আদা চা, তুলসী চা, সুলাইমানি চা, রঙ্গা সাহ, মশলা চা, লেমনগ্রাস চা, এলাচ চা, লেবু চা, গ্রিন টি, বাটার টি।
আরও পড়ুন: পালটা চাপ? আর্থিক তছরুপ মামলায় CID-র নোটিশ পড়ল অর্জুন সিংয়ের বাড়িতে