রাজভবন–নবান্ন সংঘাত লেগেই রয়েছে। একুশের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পর শপথ অনুষ্ঠান শেষ হতে না হতেই শুরু হয়েছিল সংঘাত। যা আজও অব্যাহত রয়েছে। রাজ্যপাল টুইট করলেই সেই সংঘাত বাড়তি মাত্রা পাচ্ছে বলে অভিযোগ তৃণমূল কংগ্রেসের। এদিনও তিনি মুখ্যসচিবকে তলব করেছেন। তার জেরে তিনি শাসকদলের রাজ্য সম্পাদকের তোপের মুখে পড়েছেন। এবার পালটা রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনলেন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র। যা নিয়ে এখন তোলপাড় রাজ্য–রাজনীতি।
আরও পড়ুন : এটিএম জালিয়াতি কাণ্ডে গ্রেফতার ৪, সুরাত থেকে দুই অভিযুক্তকে জালে তুলল পুলিশ
ঠিক কী অভিযোগ করেছেন মহুয়া মৈত্র? রবিবার টুইট করে মহুয়া অভিযোগ করেন, ‘রাজভবনের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিজের আত্মীয়স্বজন এবং পরিবারের সদস্যদেরই নিয়োগ করেছেন রাজ্যরাল জগদীপ ধনখড়।’ এখানেই শেষ নয়, টুইটে তার প্রমাণ দিয়েছেন মহুয়া। এমনকী এই স্বজনপোষণের অভিযোগের প্রমাণ হিসেবে তিনি রাজভবনের একাধিক কর্মীর নাম, পদমর্যাদা এবং রাজ্যপালের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক বিস্তারিত উল্লেখ করে শোরগোল ফেলে দিয়েছেন। যার জেরে ব্যাকফুটে যেতে হতে পারে রাজ্যপালকে বলে মনে করা হচ্ছে। এখন শাসকদলের হাতে এই ইস্যু বড় অস্ত্র হিসাবেও দেখছেন রাজনৈতিক কুশীলবরা।
দেখে নেওয়া যাক কেমন সেই তালিকা। মহুয়ার পোস্ট করা এই তালিকা অনুযায়ী, রাজ্যপালের অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) পদে রয়েছেন অভ্যুদয় সিং শেখাওয়াত। যিনি রাজ্যপালের জামাইবাবুর ছেলে। আবার ওএসডি কো–অর্ডিনেশন পদে রয়েছেন অখিল চৌধুরী। যিনি রাজ্যপালের পরিবার ঘনিষ্ঠ। আবার ওএসডি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পদের দায়িত্বে থাকা রুচি দুবে রাজ্যপালের প্রাক্তন এডিসি মেজর গৌরাঙ্গ দীক্ষিতের স্ত্রী। এমনকী ওএসডি প্রোটোকলের দায়িত্বে থাকা প্রশান্ত দীক্ষিত মেজর গৌরাঙ্গের ভাই।
পরিবারের বিস্তার এখানেই শেষ নয়। মহুয়া জানান, ওএসডি আইটি’র দায়িত্বে থাকা কৌস্তভ এস ভালিকার রাজ্যপালের বর্তমান এডিসি’র জামাইবাবু। আর রাজভবনে সদ্য নিযুক্ত হওয়া ওএসডি কিষাণ ধনখড় রাজ্যপালের নিকট আত্মীয়। এই তালিকা পেশ করে মহুয়া দাবি করেছেন, নিকট আত্মীয়দেরই রাজভবনে কাজের সুযোগ করে দিচ্ছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল–সহ এদের সবাইকে সরিয়ে দিলেই পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
এই তালিকার সঙ্গে একটি টুইটও করেন মহুয়া মৈত্র। টুইটে সাংসদ লেখেন, ‘অ্যান্ড আঙ্কলজি, আপনার বর্ধিত পরিবারও আপনার সঙ্গে রাজভবনে থিতু হয়েছে।’ রাজ্যপাল অবশ্য এখনও এই টুইটের জবাব দিতে পারেননি। তবে নিশ্চয়ই দেবেন এই আশা রেখেছেন সাংসদ। রাজ্যপাল নির্বাচন পরবর্তী হিংসা–সহ একাধিক ইস্যুতে রাজ্যের বিরুদ্ধে নিশানা করছেন। এই পরিস্থিতিতে মহুয়ার কড়া টুইট ও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে আনা এই অভিযোগ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : Bhatpara: ফের ভাটপাড়ায় ব্যাপক বোমাবাজি, উড়ে গেল মাথার খুলি, শাসক–বিরোধী তরজা