দলিতকে বিয়ে করার শাস্তি। ‘শুদ্ধিকরণের’ করতে মাথা মুড়িয়ে, অর্ধনগ্ন অবস্থায় তাঁকে স্নান করানো হল নর্মদা নদীর জলে। জঘন্য ওই ঘটনাটি পুরোটাই হয়েছে তরুণীর বাবার তত্ত্বাবধানে। লজ্জাজনক ওই ঘটনার পর স্বামীর বাড়িতে পালিয়ে আসে সে। এমনই অভিযোগ বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশের বেতুল জেলায়। পাশাপাশি নিরাপত্তা চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন নির্যাতিতা।
জানা গিয়েছে, গত বছরের মার্চে ২৪ বছরের সাক্ষী যাদব বিয়ে করেছিলেন ২৭ বছরের অমিত আহিরওয়ারকে। মন্দিরে গিয়ে তাঁরা বিয়ে করেন। এই বিয়ে কোনও ভাবেই মানতে রাজি ছিলেন না সাক্ষীর বাবা ও পরিবারের অন্যরা। মেয়ে-জামাই কোথায় থাকে তা জানতেন তাঁরা। এমনকী, তাঁদের সঙ্গে দেখাও হয়েছিল পরিবারের। তবুও এবছরের জানুয়ারিতে মেয়ের নামে নিখোঁজ ডায়রি করেন সাক্ষীর বাবা।
এরপর পুলিশের তত্ত্বাবধানে সাক্ষীকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনে তাঁর পরিবার। এমনকী তাঁকে একটি কাগজে সইও করিয়ে নেওয়া হয় স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক রাখবেন না, এই মর্মে। যদিও সাক্ষী ফেব্রুয়ারিতেই বাড়ি ছেড়ে একটি হস্টেলে উঠে যান পড়াশোনা শেষ করবেন বলে।
কিন্তু আগস্টে রাখি উৎসবের সময় মেয়েকে বাড়ি নিয়ে আসেন সাক্ষীর বাবা। আর তখনই তাঁর ‘শুদ্ধিকরণ’ করা হয়। মাথা মুড়িয়ে দেওয়া হয়। খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয় পোশাক। ভিড় নদীতীরে সকলের সামনে অর্ধনগ্ন অবস্থাতেই স্নান করানো হয় সাক্ষীকে।
পরে সাক্ষী হস্টেলে ফিরে গেলেও কোনও ভাবেই আর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হচ্ছিল না। অবশেষে গত বৃহস্পতিবার তিনি হস্টেল থেকে পালিয়ে স্বামীর সঙ্গে মিলিত হন। কিন্তু সাক্ষী ও অমিত দু’জনেরই এখন ভয় সাক্ষীর বাবা হয়তো তাঁদের মেরেও ফেলতে পারেন।
সাক্ষীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর বাবা ও তিনজন আত্মীয়র বিরুদ্ধে ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্ত শুরু হয়েছে। যদিও অমিতের দাবি, এর আগেও এই বিষয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। তবে এবার ন্যায়ের আশা করছেন তাঁরা।