ওয়েবডেস্ক: মার্কিন মুলুকে আছড়ে পড়ার পর করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব দালাল স্ট্রিটেও কয়েক মিনিটের মধ্যেই বড়োসড়ো থাবা বসিয়ে দিল শুক্রবার। মার্কিন শেয়ার বাজারের সূচক ডাউ জোন্সকে রেকর্ড পয়েন্ট ডুবতে দেখার পর দেশীয় বাজারও শুক্রবার সকালে ২০০৮ সালের পর থেকে বিশ্বব্যাপী বাজারের জন্য সব থেকে খারাপ সাপ্তাহিক পতনের সাক্ষী হয়ে রইল।
বিশ্বের বাজারে প্রভাবের জেরে এদিন রেকর্ড ১,০৮৩.৮৫ পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স। দিনের শুরুতে প্রায় হাজার পয়েন্ট পড়ে সেনসেক্স দাঁড়ায় ৩৮,৬৬১.৮১ পয়েন্টে। নিফটিও ৩১২ পয়েন্ট পড়ে দাঁড়ায় ১১,৩২১.৩০ পয়েন্টে। ২০১১ সালের পর বিশ্বের বাজারে প্রভাবের জেরে একদিনে এমন রেকর্ড পতন হল ভারতীয় শেয়ার বাজারে।
এ দিন কেনাবেচা শুরু হওয়ার পর মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যে, দেশীয় স্টকগুলি বিনিয়োগকারীদের সম্পদের প্রায় ৪,০০০০০ কোটি টাকা মুছে দিয়েছে। শেয়ার বাজার বিশেষজ্ঞরা এই দিনকে ‘ব্ল্যাক ফ্রাইডে’ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের আতঙ্কের জেরেই এই পতন বলে জানিয়েছেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। বিনিয়োগকারীরা আশঙ্কা করছেন, করোনাভাইরাসের প্রকোপ মহামারির আকার নিতে পারে। তাই বিভিন্ন প্রকল্প থেকে হাত গুটিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা, তার ফলেই এই ধাক্কা। প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই এই ধাক্কার প্রভাব দেখা গিয়েছে। সব থেকে বেশি ধাক্কা খেয়েছে, ব্যাঙ্কিং, অটোমোবাইল, ধাতু, খনিজ তেল ও গ্যাস সেক্টরের শেয়ারগুলি। বেশি ক্ষতি হয়েছে টাটা মোটরস, হিন্দালকো, টাটা স্টিল, ভেদান্ত, টেক মহিন্দ্রা, জেএসডব্লু এবং বাজাজ ফিনান্সের মতো শেয়ারগুলি। এই শেয়ারগুলিতে ৩.৮৪ শতাংশ থেকে ৬.২৩ শতাংশ পর্যন্ত পতন হয়েছে। তবে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে রিলায়্যান্স ইন্ডাস্ট্রিজ, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক এবং ইনফোসিসের শেয়ারে।
আরও পড়ুন: এবার করোনাভাইরাসের করাল থাবা ইরানে,মৃত ২৬, আক্রান্ত ভাইস-প্রেসিডেন্টও
শেয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসের পর আর্থিক মন্দা ছাড়া এমন রেকর্ড পতন লক্ষ্য করা যায়নি বিশ্বের বাজারে। এদিন চিন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ার মার্কেটেও ভারি ক্ষতির মুখে পড়েছে। এই বছর জাপানে অলিম্পিকের আসর বসার কথা। কিন্তু করোনার কারণে তা বাতিল হতে পারে বলে গুজব ছড়ায়। তার জেরে জাপানের সূচক নিক্কেই এদিন প্রায় ৩.৩ শতাংশ পড়ে গিয়েছে। সব মিলিয়ে করোনাভাইরাসের জেরে গোটা বিশ্বের বাজারেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।