প্রায় ১৩ বছর ধরে ব্রিটনি স্পিয়ার্সের জীবনযাত্রা ও আর্থিক সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তাঁর বাবা জিমি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কনজারভেটরশিপ আইনের অধীনে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছিল জিমিকে। এবার বিচারকের কাছে আর্জি জানিয়ে এই ‘বন্দিদশা’ থেকে মুক্তি চাইলেন ব্রিটনি। তিনি জানান, যত জলদি সম্ভব এই ‘অপমানজনক’ কেস শেষ করতে চান তিনি। যা তাঁর মন ভেঙে দেয় ও দাসত্ব অনুভব করায়।
এই প্রথম খোলা আদালতে তাঁর বাবা ও যাঁরা তাঁকে ‘নিয়ন্ত্রন’ করছেন, তাঁদের নিন্দা করেন ব্রিটনি। জানান, তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে তাঁকে জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ খেতে বাধ্য করেন তাঁরা। এমনকী, প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে করতে ও আরেক সন্তান নিতেও তাঁকে বাধা দেওয়া হচ্ছে। লস এঞ্জেলেসের আদালতের বিচারককে ব্রিটনি বলেছেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন এবং দিনের পর দিন কেঁদেছেন। ‘আমি আমার জীবন ফিরে পেতে চাই’, জানিয়েছেন তিনি।
ব্রিটনি আরও জানান, ‘এই কনজারভেটরশিপ ভালোর থেকে আমার খারাপ বেশি করছে। আমারও স্বাভাবিক জীবন কাটানোর অধিকার আছে। আমাকে আমার প্রেমিকের সঙ্গে লং ড্রাইভে যাওয়ারও অনুমতি দেওয়া হয় না।’ ব্রিটনির দাবি, তাঁর বাবা তাঁর ওপর অত্যাধিক নিয়ন্ত্রণ করে তাঁর জীবন অতিষ্ট করে তুলেছেন।
আরও পড়ুন: সমাজে মেয়ে হয়ে জন্মানোটাই ভুল! Sexism, Body Shaming নিয়ে বিস্ফোরক ‘শেরনি’ বিদ্যা
বুধবার আদালতের শুনানিতে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে ৩৯ বছর বয়সী মার্কিন পপ তারকা বলেছেন, তাকে আরও সন্তান নেওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে; ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ লিথিয়াম। ২০ মিনিটেরও বেশি সময় দেওয়া বক্তব্যে ব্রিটনি নিজের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরেন। লস এঞ্জেলেসের আদালতের বিচারক ব্রেন্ডা পেনি শুনানিতে ‘সাহসী’ বক্তব্য রাখায় ব্রিটনিকে ধন্যবাদ দেন।
বাবার সঙ্গে ব্রিটনির দ্বন্দ্ব নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই কানাঘুষা চলছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পপ তারকার নানান পোস্টে এ বিষয়ে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তার ভক্ত সমর্থকরা। ব্রিটনির প্রাক্তন বয়ফ্রেন্ড জাস্টিন টিম্বারলেক ব্রিটনিকেই সমর্থন জানিয়েছেন। টুইটে লিখেছেন, ‘ওঁর সঙ্গে যা হচ্ছে তা হতাশাজনক। কোনও নারী তাঁর শরীর নিয়ে কী করবে সেই সিদ্ধান্ত অন্য কেউ নিতে পারে না।’
After what we saw today, we should all be supporting Britney at this time.
Regardless of our past, good and bad, and no matter how long ago it was… what’s happening to her is just not right.
No woman should ever be restricted from making decisions about her own body.
— Justin Timberlake (@jtimberlake) June 24, 2021
২০০৮ সালে আদালতের এক আদেশে ব্রিটনির বাবা জেমিকে যাবতীয় সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়। সে সময় উদ্বেগ ও অবসাদের কারণে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল ব্রিটনিকে। তখন ১৩ বছর আগে কনজারভেটরশিপের রায় দিয়েছিল মার্কিনি আদালত। আদালতের তরফে এখনও কোনও রায় দেওয়া না হলেও গোটা বিশ্ব জুড়ে ‘ফ্রি ব্রিটনি’ হ্যাশট্যাগে ছেয়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া।
আরও পড়ুন: হারালেন কাছের মানুষকে, শোকে ভেঙে পড়েছেন অপরাজিতা আঢ্য!