গভীর রাতে মধ্য কলকাতার বউবাজারের (Bowbazar) গনেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের একটি বহুতলে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। ভস্মীভূত আটতলা আবাসনটির বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট। অগ্নিকাণ্ডে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে, রাতে আগুন নেভানো সম্ভব হলেও সকাল থেকে ফের ধোঁয়া বের হতে দেখা যায় বাড়িটি থেকে।
শুক্রবার রাত ১০টা ১৫ মিনিট নাগাদ শহরের অন্যতম ব্যস্ত এলাকা গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ের ওই বহুতলে প্রথমে মিটার ঘরে আগুন লাগে। তার পর তা দ্রুত গোটা আবাসনে ছড়িয়ে পড়ে। একতলা থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আটতলায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে একের পর এক ১০টি দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছে যায়। আনা হয়েছে হাইড্রলিক ল্যাডারও। জানা গিয়েছে, আগুন লাগার সময় বহুতলে আটকে ছিল প্রায় ৫০টি পরিবার। রাত ১টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, এই অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন দু’জন।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের জেরে আতঙ্কে এক কিশোর বহুতল থেকে ঝাঁপ দেয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসাপাতালে ভর্তি করা হয় ওই কিশোরকে। এদিন গভীর রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন আর এক আবাসিক। তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে বাড়ির শৌচাগার থেকে। পুলিশের দাবি, মৃত মধ্যবয়েসি মহিলা আগুন থেকে বাঁচতে বাথরুমে আশ্রয় নেন। কিন্তু পরে সেখানেই দম বন্ধ হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত দু’জনেরই নাম–পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: কলকাতায় শুরু আইফোন ১২-র প্রি-বুকিং, জেনে নিন কী সঠিক প্রক্রিয়া
এদিন আগুন ছড়িয়ে পড়ে ওই বহুতলের পাশেও। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বন্ধ রাখা হয়েছে গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ থেকে লালবাজারগামী রাস্তাটি। অগ্নিকাণ্ডের পিছনে রক্ষণাবেক্ষণে গাফিলতিকেই দায়ী করছেন মৃতের আত্মীয়রা। তাঁদের দাবি, বহু বছর ধরেই বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগের হাল বিপজ্জনক। কিন্তুতা নিয়ে অনেক বার অভিযোগ জানালেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি বাড়ির মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সংস্থা। বাড়িটি অনেক কাল যাবৎ বসবাসের অযোগ্য বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
১৯৩৭ সালে তৈরি বাড়িটিতে ৪০-৫০টি পরিবারের বাস। অধিবাসীদের অভিযোগ, বাড়ির লিফ্টে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে প্রায়ই সমস্যা দেখা দেয়। তা ছাড়া রয়েছে জলের সমস্যা। বাড়ির জলাধারে প্রায়ই জল থাকে না বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের সদস্যদের। তাঁদের দাবি, শুক্রবার রাতেও আগুন নেভানোর জন্য জল মেলেনি বাড়ির ট্যাঙ্কে।
বাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা অবশ্য জানাচ্ছেন, শহরের যে কোনও প্রাচীন ভবনের মতোই বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা রয়েছে বাড়িটির। সেই কারণেই ওভারহেড বিদ্যুৎবাহী তারের সমাবেশ রয়েছে সেখানে। তাঁদের দাবি, লিফ্ট নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। বাড়ির জলের ট্যাঙ্কেও পর্যাপ্ত পরিমাণে জল মজুত ছিল এবং অগ্নিকাণ্ডে তা ব্যবহার করাও হয়েছে।
শনিবার সকালেই পৌঁছচ্ছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।
আরও পড়ুন: পুরুষের তুলনায় যৌন চাহিদা বেশি নারীর, নেপথ্যে কোন রহস্য?