সেলসম্যান হিসাবে মোদী তুলনাহীন। ইতিমধ্যে তিনি প্রমাণ রেখেছেন তার। বেচে দিয়েছেন বহু রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি। আজ ব্রিগেডে তৃণমূল ফেরত চোরেদের নিয়ে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন ফেরি করলেন মোদী । এর আগে চোরেদের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তুলতে দেখা গেয়েছে মোদীকে। নীরব মোদী ও মেহুল চোকসির মত আন্তর্জাতিক চোরেদের পর, এবার তৃণমূল ফেরত এক ঝাঁক চোরের সঙ্গে ফের ফ্রেমবন্দি হলেন ‘আচ্ছে’ দিনের ‘ঝুটে’ প্রচারক।
এদিন বেলা আড়াইটের কিছু পরে বক্তব্য শুরু করেন প্রধানমন্ত্রী। বিজেপির রাজনৈতিক পরিকল্পনা নিয়ে একে একে বলতে শুরু করেন তিনি। প্রশ্ন তোলেন, স্বাধীনতার পর কিছুদিন বাংলা উন্নয়নের পথে এগোলেও কেন তার পর সব স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে। প্রতিশ্রুতি দেন, বাংলায় বিজেপি সরকার এলে ২০৪৭ সালে দেশ যখন স্বাধীনতার শতবর্ষ পালন করবে তখন ভারকে নেতৃত্ব দেবে বাংলা। কলকাতাকে দেশের সেরা শহর হিসাবে গড়ে তোলা হবে বলেও দাবি করেন তিনি। বলের আটকে থাকা কাজ আরও দ্রুত শেষ হবে। কলকাতা মুড়ে ফেলা হবে উড়ালপুল দিয়ে।
আরও পড়ুন: WB election 2021 : টিকিট পেতে মুকুলের দরজায় তৃণমূলের বঞ্চিত বিধায়কদের ভিড়
নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়েই ছাড়বেন। ব্রিগেডে সভার শুরুতেই জানিয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। তবে শুভেন্দুর ঘোষণা যেখানে হুঁশিয়ারি ছিল, নরেন্দ্র মোদী তা তাকে কটাক্ষের পর্যায়ে নিয়ে গেলেন। শুভেন্দুর ‘গড়’ নন্দীগ্রামে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তৃণমূল নেত্রীকে তীব্র কটাক্ষ করলেন তিনি। পেট্রোপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে ই-স্কুটি চেপে মমতার নবান্ন যাওয়াকে নন্দীগ্রামের সঙ্গে জুড়ে দিলেন। মোদী বলেন, ‘‘কিছু দিন আগে স্কুটি সামলাচ্ছিলেন দিদি। সবাই ভয় পাচ্ছিলেন, আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত না পান। ভাগ্যিস পড়ে যাননি। নইলে যে রাজ্যে স্কুটি তৈরি হয়েছে, সেই রাজ্যকেই শত্রুতা বানিয়ে ফেলতেন। তাই ভাল হয়েছে পড়ে যাননি। কিন্তু ভবানীপুর যেতে যেতে নন্দীগ্রামের দিকে ঘুরে কী করে ঘুরে গেল স্কুটি? আমি চাই না আপনি পড়ে গিয়ে আঘাত পান। কিন্তু স্কুটি যখন নন্দীগ্রামেই গিয়ে পড়েছে, তখন আমরা আর কী করব।‘‘
দিদি হিসেবে ১০ বছর আগে মমতাকে ক্ষমতায় বসিয়েছিলেন বাংলার মানুষ। কিন্তু মমতা শুধু এক জন ভাইপোর পিসি হয়ে রয়ে গিয়েছেন বলেও কটাক্ষ করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘১০ বছর পর মানুষ জবাব চাইছেন। দিদি হিসেবে আপনাকে বেছে নিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু আপনি নিজেকে শুধু ভাইপোর পিসি হিসেবেই সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার এবং তৃণমূলের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম গজিয়ে উঠেছে বলেও মন্তব্য করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘কখনও আমাকে রাবণ, কখনও দৈত্য, কখনও গুন্ডা বলছেন দিদি। এত রাগ কেন দিদি? আপনার দল এবং আপনার সরকারের ছড়ানো পাঁকেই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। গণতন্ত্রের নামে বাংলায় লুঠতন্ত্রকে প্রশ্রয় দিয়েছেন, জাত-ধর্মের নামে বিভেদের রাজনীতি করেছেন, তাই আজ বাংলায় পদ্ম ফুটছে। দিদিকে অনেক দিন ধরে চিনি। বামপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়া দিদি এমন ছিলেন না। কিন্তু আজ দিদির রিমোট কন্ট্রোল অন্যের হাতে।’’
সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খেলা হবে না। খেলা শেষ। খেল খতম। তৃণমূলের খেল খতম।’