অবাঞ্ছিত গর্ভধারণের সমস্যা নিয়ে কম বেশি প্রত্যেকেই চিন্তায় ভোগেন। অনেকেই থাকেন যাঁরা সঙ্গমের সময় কন্ডোম ব্যবহার করেন না। এক্ষেত্রে অবাধ মিলনের পর অনেকেই গর্ভনিরোধক বড়ি বা কন্ট্রাসেপটিভ পিল খান। তবে এই পিল খেয়ে কিন্তু ঘটে যেতে পারে চরম বিপদ৷ যার পরিণতি কখনও মৃত্যু বা পরবর্তী সময় সন্তানধারণে সমস্যা৷ এক্ষেত্রে বিবাহিত হোক কিংবা অবিবাহিত– আনওয়ান্টেড প্রেগন্যান্সির মোকাবিলায় হাঁটবেন কোন পথে ? চলুন আজ আলোচনা করা যাক এই বিষয়টি নিয়ে।
অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার কারণ সমূহ
অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থায়, দম্পতিরা স্বভাবতই প্রস্তুত থাকেন না তাদের পরিবার পরিকল্পনা বিকাশের ক্ষেত্রে,তাই এই ধরণের খবরে তারা বেশিরভাগ সময়েই আঘাত পান।অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা ‘উদ্দীপনার মুহূর্ত‘- এর ফল হতে পারে, গর্ভনিরোধকের ভুল ব্যবহারের জন্য অথবা ধর্ষণের ন্যায় কোন আঘাত–জনিত কারণে হয়ে থাকতে পারে।চলুন এরকমই কিছু কারণ এর বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থার প্রাথমিক একটি কারণ হল গর্ভনিরোধক ব্যবহারের ব্যার্থতা।পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় যে,প্রায় 53% মহিলার অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা ঘটে যারা গর্ভনিরোধক ব্যবহার করেন।তরুণী কিম্বা বয়স্ক যেকোন বয়সের মহিলাদের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ কারণ।
- গর্ভনিরোধকের ভুল ব্যবহার—আপনি যদি নির্দিষ্ট গর্ভনিরোধকের উল্লিখিত নির্দেশাবলী গুলি যথাযথ ভাবে না মানেন, এটা প্রমাণ করতে পারে একটা বড় ধরণের ভুলের।আপনি যদি আপনার পছন্দের গর্ভনিরোধক বড়ি গ্রহণ করেন, এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ সেটি প্রতিদিন একই সময়ে সেবন করা।এটি নূন্যতম গর্ভাবস্থার সম্ভাবনা কমায়।অনুরূপ ভাবে, যৌন মিলন ঘটার আগে একটি সার্ভিক্যাল ক্যাপ বা টুপি অথবা মধ্যচ্ছদা ব্যবহার সার্ভিক্স অঞ্চলকে পুরোপুরি ঢেকে রাখতে নিশ্চিত করে।সেক্ষেত্রে গর্ভনিরোধক পদ্ধতিতে কন্ডোম কিছুটা বিশ্বাসযোগ্য।যাইহোক, আপনার সঙ্গীকে সেটিকে অবশ্যই সঠিকভাবে ব্যবহার করতে জানতে হবে।
- নিরাপদ দিনের ভুল গণনা—একটি অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থা হতে পারে যদি আপনার সম্ভাবনাময় সময়ের হিসেব ভুল করেন।আপনাকে দ্বিগুণ নিশ্চিত হতে হবে মাসের নিরাপদ সময়কাল সম্পর্কে,যার উপর এই পদ্ধতিটি নির্ভর করে পুরোপুরি ভাবে।
- গর্ভনিরোধকের অনিয়মিত ব্যবহার—গর্ভনিরোধক পদ্ধতি যেমন–মধ্যচ্ছদা,কন্ডোম এবং সার্ভিক্যাল ক্যাপ বা টুপি প্রতিবার সঙ্গমের সময় ব্যবহার করা উচিত।যদি আপনি গর্ভনিরোধক বড়ি খেতে ভুলে যান বা মর্নিং আফটার পিল নিয়ম মেনে না নেন, তবে আপনি আপনার আশার বিরুদ্ধেই গর্ভবতী হয়ে যেতে পারেন।
- জরুরী গর্ভনিরোধক বড়ির অপর্যাপ্ততা —মহিলাদের গর্ভনিরোধের ক্ষেত্রে জরুরী গর্ভনিরোধক বড়ি একটি অন্যন্ত জনপ্রিয় পদ্ধতি।যাইহোক, এটা প্রায়ই ঘটে যে,বড়িগুলি সবসময়ে দোকানে পাওয়া না যেতে পারে অথবা কোন সময়ে এটির জন্য প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন হতে পারে।এই সবের কারণে বড়ি গ্রহণের ক্ষেত্রে দেরী হতে পারে যার পরিণতি গর্ভবস্থা।
- জ্ঞানের অভাব—মহিলারা প্রায়ই অসচেতন থাকেন তাদের নিজেদের শরীর সম্পর্কে এবং জানেন না কোন সময়ের কোন ধরণের সঙ্গমের ফলে গর্ভধারণ ঘটে থাকে।যদি সে ক্ষেত্রে যৌন–সঙ্গম এবং এর ফলাফল সম্পর্কে অপর্যাপ্ত জ্ঞান থাকে, তবে এটি গর্ভধারণের বড় একটি কারণ হয়ে উঠতে পারে, বিশেষত তরুণীদের ক্ষেত্রে।
কীভাবে অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এড়িয়ে চলবেন?
আমরা প্রত্যকেই অপ্রীতিকর চমকগুলি যা আমাদের স্বভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটায় সেটাকে ঘৃণা করি। অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণ এই তালিকার সবথেকে উপরের দিকে স্থান পাবে তা বলাই বাহুল্য। আপনি যদি এই অপ্রত্যাশিত গর্ভধারণের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে চান তাহলে নিচের সতর্কতাগুলো মেনে চলুন।
- যদি আপনার কৈশরকাল উত্তীর্ণ না হয়ে থাকে তাহলে অন্তঃপ্রবেশকারী সঙ্গম (পেনিট্রেশন সেক্স) এড়িয়ে চলুন যতদিন না যথেষ্ট পরিণত এবং দায়িত্ববান হয়ে উঠছেন।
- যদি আপনি যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হবার পরিকল্পনা করেন তাহলে সহজলভ্য গর্ভনিরোধকের ব্যবস্থা রাখুন।আপনার সঙ্গীকে প্রতিবার সঙ্গমের সময় কনডোম ব্যবহার করতে বলুন,প্রয়োজনে গর্ভনিরোধক বড়ি খান।
- আপনি যদি গর্ভনিরোধক ব্যবহার হয়েছে কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত না হন তাহলে আপৎকালীণ গর্ভনিরোধক ব্যবহার করুন।
- আপৎকালীন অবস্থায় আপনি মর্নিং–আফটার পিল খেতে পারেন । তবে এটাকে কখনই আপনার অভ্যাসে পরিণত করবেন না যেহেতু এটা আপনার শরীরের উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।