আন্দোলন, বিক্ষোভে অংশগ্রহণ? মিলবে না পাসপোর্ট, সরকারি চাকরি, নোটিশ দিল বিজেপি শাসিত এই দুই রাজ্য

প্রতিবাদ করলেই আর মিলবে না সরকারি চাকরি। নাও মিলতে পারে ব্যাংক ঋণ।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

বিতর্কে বিহারের (Bihar) নীতীশ কুমারের (Nitish Kumar) প্রশাসন। কোনওরকম ধরনা, হিংসাত্মক বিক্ষোভ বা পথ অবরোধে অংশ নিলে বিক্ষোভকারী বা আন্দোলনকারীদের কেউই কোনওরকম সরকারি চাকরি বা সরকারি কন্ট্রাক্ট পাবেন না। সম্প্রতি এমনই নির্দেশিকা জারি করেছে বিহার পুলিশ। আর এই নিয়েই বিরোধীদের আক্রমণের মুখেও পড়তে হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারকে। টুইটে তাঁকে হিটলার এবং মুসোলিনির সঙ্গে তুলনা করেছেন তেজস্বী যাদব (Tejashwi Yadav)।

১ ফেব্রুয়ারি বিহারে DIG-র তরফে একটি নোটিশ জারি করা হয়। যেখানে উল্লেখ করা হয়, মিছিল-মিটিং, ধর্নায় অংশগ্রহণ করে পুলিশের খাতায় নাম তুললে সেই ব্যক্তিকে ফলাফল ভোগ করতে হবে। বেশ কিছু পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে হবে সরকার বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের। নোটিশে এইরকম ন’টি বিষয়ের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স, পাসপোর্ট, সরকারি ঠিকা চাকরি, সরকারি দপ্তরের চুক্তিভিত্তিক কাজ, বোর্ড অথবা কমিশনের কাজ, পেট্রোল পাম্পের লাইসেন্স, গ্যাস এজেন্সির লাইসেন্স, সরকারি কিংবা আর্থিক অনুদান, ব্যাংক ঋণ ইত্যাদি।

বিহার পুলিশের থেকে আরও একধাপ এগিয়ে গিয়েছে উত্তরাখণ্ড সরকার। কেবলমাত্র মিছিল, মিটিং, ধরনাই নয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও সরকার বিরোধী কোনও মন্তব্য করলে নানা পরিষেবা থেকে নাগরিকদের বঞ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উত্তরাখণ্ড প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সেখানে সোশ্যাল মিডিয়ার উপর সরকারি নজরদারি চালানো হচ্ছে। মঙ্গলবার একটি সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যের DGP অশোক কুমার বলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলিতে অ্যান্টি ন্যাশনাল অর্থাৎ দেশবিরোধী অথবা অসামাজিক কোনও মন্তব্য পোস্ট করা হচ্ছে কিনা, তার উপর নজরদারি চলবে। পুলিশের খাতায় নাম উঠলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

পুলিশের এই শীর্ষকর্তা আরও জানান, প্রমাণ হিসেবে পোস্ট অথবা কমেন্টগুলির স্ক্রিনশটও রাখবে পুলিশ। তাঁর কথায়, ‘আগে একজন চাকরি প্রার্থী কিংবা ঋণগ্রহীতার নামে কোনও FIR রয়েছে কিনা তা দেখা হত। কিন্তু, এবার থেকে সোশ্যাল মিডিয়াতেও সেই ব্যক্তির কার্যকলাপের উপর নজর রাখা হবে।’

জানা গিয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রথমবারের জন্য কোনও দেশবিরোধী পোস্ট দেখলে সেই ব্যক্তি কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ পাবেন। তবে দ্বিতীয়বার থেকে এই ধরনের পোস্ট আর ক্ষমার যোগ্য হবে না। উত্তরাখণ্ডের DGP-র বক্তব্য, ‘দেশের ঐক্যে আঘাত হানার মতো যে কোনও পোস্টই দেশ বিরোধী বলে গণ্য হবে।’

আরও পড়ুন: ৬ ফেব্রুয়ারি দেশজুড়ে Chakka Jam-এর ডাক, অন্নদাতাদের ঠেকাতে সিঙ্ঘু সীমানায় পেরেক-কাঁটাতারের বেড়া

অন্যদিকে, বিহার পুলিশের নোটিশে বলা হয়েছে, কোনও বিধায়ক, সাংসদের বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য করা হলেও রাজ্যবাসীকে একাধিক সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চিত করা হবে। এই প্রসঙ্গ টেনে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার সম্প্রতি প্রযুক্তির অপব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর কথায়, ‘সরকারের ভালো উদ্যোগ মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছচ্ছে না। সোশ্যাল মিডিয়াজুড়ে কেবলমাত্র অসামাজিক কার্যকলাপ হচ্ছে। এর জেরে নবীন প্রজন্মের কাজে সরকার সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছচ্ছে।’

দেশজুড়ে বিহার এবং উত্তরাখণ্ড সরকারের এই নির্দেশিকার চরম বিরোধিতা হয়েছে। একটি টুইটে RJD নেতা তেজস্বী যাদব বলেন, ‘রাজ্যে নীতীশ সরকার হিটলার এবং মুসোলিনির মতো আচরণ করছে। মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করার চেষ্টা চলছে। সরকার আদতে কাউকে চাকরি কিংবা অনুদান দিতেই রাজি নয়।’ প্রাক্তন সাংসদ তথা RJD সহ সভাপতি শিবানন্দ তিওয়ারি বলেন, ‘ভাবতেও অবাক লাগছে, এই নীতীশ কুমারই ১৯৮৩ সালে কংগ্রেস সরকারের প্রেস বিলের বিরোধিতা করেছিলেন।’

আরও পড়ুন: খর্ব হচ্ছে নাগরিকদের অধিকার! গণতন্ত্র সূচকে আরও দু’ধাপ নামল ভারত

 

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest