নতুন দল গড়ার পথেই হাঁটলেন ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকি আল কোরাইশি ভাইজান (Abbas siddiqui)। কয়েক দিন আগে মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসির(Asaduddin owaisi) সঙ্গে সাক্ষাতের পর জল্পনার মোড় অন্যদিকে নিলেও নিজের অবস্থান সে দিন স্পষ্ট করেননি আব্বাস সিদ্দিকি। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সিদ্দিকি আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিলেন, আগামী ২১ জানুয়ারি নতুন দল নিয়ে আসছেন তাঁরা।
ফুরফুরা শরিফের পীরজাদা বলেন, বাংলার মুসলিম, দলিত, আদিবাসী এবং পিছিয়ে পড়া মানুষের সংবিধান অধিকারের লড়াইয়ে সামিল হব আমরা। প্রাথমিকভাবে ৬০ থেকে ৭০টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে, একটি সর্বভারতীয় দলের সঙ্গে তাদের কথা চলছে।
আব্বাসউদ্দিন অবশ্য জানিয়েছেন, রাজ্যে ২৯৪টি আসনেই হয়তো তাঁরা এবার প্রার্থী দিতে পারবেন না। তবে যেখানে যেখানে তাঁদের জনভিত্তি রয়েছে ও শরিকরা রয়েছেন সেখানেই অবশ্য লড়বেন। “খুব শিগগির দেখা হবে রাজনীতির ময়দানে।”
আরও পড়ুন: পীরজাদা আব্বাস সিদ্দিকী যেন জোশে ভরপুর ‘আর্তুগরুল গাজী’, কাঁপন ধরাচ্ছেন শাসক দলের অন্দরে
আব্বাসের একটি সংগঠন রয়েছে। নাম সুন্নাতুল জামাত। তিনি অবশ্য বলেন, “সুন্নাত জামাত অরাজনৈতিক সংগঠন। দলের নাম হবে ভিন্ন।” তাঁর কথায়, “এই যাত্রাপথে আমি থাকব না। আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ভাই আমার উপর আস্থা রেখেছেন। বলেছেন, আমার নির্দেশে বাংলায় মিম চলবে। আমি আজ বলছি, আরও অন্তত ১০টি সংগঠন থাকবে আমার সঙ্গে। অর্থাৎ একটা ফ্রন্ট তৈরি হবে। এ বার সংখ্যালঘু মহাজোট হবে বাংলায়।”
বৃহস্পতিবার ‘দ্য ওয়াল’কে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে আব্বাস সিদ্দিকী বলেন “ভারতের সংবিধান ধর্মের ভিত্তিতে রাজনৈতিক দল গঠনে অনুমতি দেয় না। আমার উদ্দেশ্যও তা নয়। আমি গরিব হিন্দুর অধিকারের জন্যও লড়ব। আদিবাসীদের জন্যও লড়ব। কিন্তু ভাই, বামফ্রন্ট জমানায় আমিই তো দেখেছি, কোনও না কোনও পীরজাদা ধর্মীয় মঞ্চ থেকেই মুসলিম ভাইদের ঠেলে বামপন্থী গঙ্গার জলে ফেলেছেন। আবার তৃণমূল ক্ষমতায় এলে দেখেছি, মঞ্চে তাঁদের হাত ধরে সেই পীরজাদা বলছেন, ইনিই আমাদের ক্যান্ডিডেট!”নাম নাম করলেও আবাসের নিশানায় যে ত্বহা সিদ্দিকী তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি কারও।
তিনি আরও বলেন, “ও ধোঁকাবাজি আমার স্বভাবে নেই। ইমানের সঙ্গে কাজ করি। মানবতার সঙ্গে কাজ করি। পষ্টাপষ্টি বলি, এমন কিছু করবে না যাতে দেশের ক্ষতি হয়। হজ, জাকাত যেমন ইসলামের শিক্ষা তেমনই দেশকে ভালবাসাও ইসলামের শিক্ষা। দেশবিরোধী কাজ যারা করবে তারা ইসলাম বিরোধী। আমি বলি, ন্যায়ের জন্য লড়াই করতে। সৎ মানুষের পাশে থাকতে।”
আব্বাসকে বাংলায় নেতা মেনেছেন ওয়াইসি। তার পরই শাসক দলের তরফে বলা হয়েছে, কৌশলে বাঙালি মুসলিম মুখকে সামনে রাখতে চাইছেন ওঁরা। এসবে মানুষ ভুলবে না। ওয়াইসি বহিরাগত। এ অভিযোগে গুরুত্ব দিতে চাননি আব্বাস।
তিনি বলেন, “বাংলার সংখ্যালঘুরাই তো লড়বেন। নিজেদের অধিকারের বিরুদ্ধে লড়বেন। বেকুব বানানোর চেষ্টার বিরুদ্ধে লড়বেন।” তাঁর কথায়, “ওয়াইসি সাহেব যে আচরণ দেখিয়েছেন তা আমার অত্যন্ত ভাল লেগেছে। উনি সত্যনিষ্ঠ। উনি ঠিক কথাই বলেছেন। ভোট ভাগাভাগি যাতে না হয় সে জন্য ফ্রন্ট তথা মহাজোট গঠন করতেই হবে। তা সকলেরই স্বার্থ সিদ্ধ করবে।”
আরও পড়ুন: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলায় হাইকোর্টে ধাক্কা রাজ্যের, ৩০ দিনে নিয়োগের নির্দেশ