আগ্নেয়াস্ত্র-সহ বিজেপির মিছিল থেকে জিটি রোডে ধরা পড়েছে বলবিন্দর সিং। বিজেপির দাবি, তাঁর কাছে আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। তদন্তে পুলিস জানতে পেরেছে, লাইসেন্স থাকলেও এ রাজ্যে তা বৈধ নয়।
৯ এমএম পিস্তল নিয়েই বিজেপির নবান্ন অভিযানে মিছিলে এসেছিলেন বলবিন্দর সিং। জিটি রোডে তাঁকে গ্রেফতার করেন আসানসোলের এসিপি তথাগত পাণ্ডে। পুলিস জানতে পেরেছে, বিজেপি নেতা প্রিয়াংশু পাণ্ডের দেহরক্ষী বলবিন্দর সিং। প্রিয়াংশু বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত।
বলবিন্দরের থেকে পাওয়া বন্দুকের লাইসেন্স যাচাই করে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২০০৯ সালের গোড়ায় রাজৌরি জেলার জেলাশাসক সেটি ইস্যু করেছিলেন। ‘ডিবিবিএল গান’ (ডাবল ব্যারেল শটগান) লাইসেন্সটির কার্যকারিতা ওই জেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ২০১২ সালের মার্চ মাসে উধমপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসকের নির্দেশে অস্ত্রের চরিত্র বদলে রিভলভার বা পিস্তল করা হয়। ২০১৮ সালের মে মাসে লাইসেন্সধারী ব্যক্তি .৩২ ওই পিস্তলটি কিনেছিলেন। পুনর্নবীকরণের পরে লাইসেন্সটি ২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ।
আরও পড়ুন: সিসিটিভি ভাঙা কেন, কোথায় নিরাপত্তারক্ষীরা? মণীশ খুনের তদন্তে একাধিক অসংগতি ঘিরে প্রশ্ন
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘প্রিয়াংশু পাণ্ডের ব্যক্তিগত দেহরক্ষীর কাছ থেকে তাঁর লাইসেন্স-যুক্ত বন্দুক পুলিশ নিয়ে নিয়েছে। আমারও তো দেহরক্ষীরা আছেন! তাঁদের কাছেও তো লাইসেন্সযুক্ত বন্দুক আছে! এই বিষয়টা তুলে আমাদের দলের বদনাম করার চেষ্টা হচ্ছে।’’ দলের সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু আরও এক ধাপ এগিয়ে বলেন, “এখন দেশের মধ্যে যে কোনও জায়গার লাইসেন্স থাকলেই সেটি সারা দেশের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এ ব্যাপারে নতুন আইন হয়েছে।” যদিও সেই আইনের কোনও বিশদ ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।
এই পরিপ্রেক্ষিতেই বিজেপির বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “একটা ভাত টিপলেই যেমন বোঝা যায় সব ভাত সিদ্ধ হয়েছে কি না, তেমনই এমন ধরনের বেআইনি অস্ত্রধারী কত জন ব্যক্তি ভিড়ের মধ্যে ঘুড়ে বেড়িয়েছেন তা সহজে অনুমান করা সম্ভব। বিজেপি যে সশস্ত্র বহিরাগতদের এনে বাংলায় অশান্তি এবং দাঙ্গার রাজনীতি করে, আজ সেটা ধরা পড়ে গেল।” তাঁর আরও মন্তব্য, “বিজেপি নেতাদের কথায় এটাও পরিষ্কার যে, ওই ব্যক্তি ব্যারাকপুরে তাঁদের দলের কোনও নেতার ঘনিষ্ঠ। সেখানে খুনের রাজনীতি কে, কী ভাবে আমদানি করছে, তার আরও কিছু হদিশ হয়তো এ বার মিলতে পারে।”
বিজেপির নবান্ন (Nabanna) অভিযান নিয়ে শুরু থেকেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতি। বৃহস্পতিবার রীতিমতো তাণ্ডব চলে বাংলায়। যদিও বিজেপির অভিযোগ, এসবই ইচ্ছাকৃতভাবে রাজ্য সরকারের তরফে করা হয়েছে। এদিকে, বিজেপির মিছিলকারীর কাছ থেকেই উদ্ধার হয়েছে আগ্নেয়াস্ত্র। আর সেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়েই চলছে রাজনৈতিক আকচাআকচি। যদিও বিজেপির তরফে প্রথমে দাবি করা হয়েছিল এসবই তৃণমূলের চক্রান্ত। যদিও এক দিকে আইনের চোখে অবৈধ কাজ, অন্য দিকে মিছিলে ‘বহিরাগত’ ঢোকানোর অভিযোগ— এই জোড়া ফলায় বিদ্ধ হচ্ছে বিজেপি।
সব খবরের আপডেট এখন টেলিগ্রামে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন এখানে।https://t.me/thenewsnest
আরও পড়ুন: “পুরোপুরি শাস্তি পাবে হাথরসের ধর্ষিতার পরিবার”, দিলীপের পর বেফাঁস লকেট