চাকরির মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী এপ্রিলে। তার আগেই চাকরি থেকে ইস্তফা দিলেন চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর। অবসরের মাস তিনেক আগে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার পরেই তাঁর রাজনীতিতে আসা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
শুক্রবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ইস্তফার চিঠি পাঠিয়েছেন হুমায়ুন। ৩১ জানুয়ারির পর থেকে আর চাকরিতে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। হুমায়ুনের জায়গায় চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার নিযুক্ত করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার গৌরব শর্মাকে।নবান্ন সূত্রের খবর, ব্যক্তিগত কারণে ইস্তফা দিয়েছেন তিনি।
২০০৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশে যোগদান করা এই আইপিএস অফিসারকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য বিশেষ পছন্দ করতেন। যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গন থেকে কুখ্যাত “হাত কাটা দিলীপ”কে গ্রেফতার করে প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক প্রশংসিত হন তিনি। তবে সে সময় যে সব পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব আচরণের অভিযোগ তুলত তৃণমূল, তার মধ্য়ে অন্য়তম ছিলেন এই হুমায়ুন কবীর। কিন্তু রাজ্যে রাজনৈতিক পালাবদলের পর ছবিটা পাল্টে যায়। ক্রমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন এই আইপিএস অফিসার।
হুমায়ুন যখন মুর্শিদাবাদ জেলার পুলিশ সুপার ছিলেন, তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করতেন অধীর চৌধুরী। তৃণমূলের জেলা সভাপতির মতো আচরণ করছেন এই পুলিশ অফিসার, এমন অভিযোগ করেছিলেন বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ। পরে হুমায়ুন কবীরকে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার করে নিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: শীতের মাঝেই শুরু হবে বৃষ্টি, ভিজবে দক্ষিণবঙ্গের বহু এলাকা
২০১৯ সালের ২৯ জুলাই ব্যান্ডেলের তৃণমূল নেতা দিলীপ রাম খুন হন। সেই সময় চন্দননগর পুলিশের কমিশনার ছিলেন অখিলেশ চতুর্বেদী। ওই খুনের ঘটনার জেরে অখিলেশকে সরিয়ে হুমায়ুনকে কমিশনার করা হয়। তার পর থেকে চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব সামলেছেন ২০০৩ ব্যাচের এই আইপিএস অফিসার।
কিছু দিন আগেই তাঁর স্ত্রী অনিন্দিতা কবীর তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই হুমায়ুনের চাকরি ছাড়ার পর জল্পনা তৈরি হয়েছে, রাজ্যের আর এক আইপিএস অফিসার ভারতী ঘোষের মতো তিনিও কি এ বার রাজনীতিতে নাম লেখাবেন? হুমায়ুন অবশ্য বলেন, ‘‘লেখালেখি করার সময় পাচ্ছিলাম না। আমার লেখা গল্প নিয়ে কয়েকটা সিনেমা তৈরির কথা রয়েছে। এখনই রাজনীতি নিয়ে কিছু ভাবছি না।’’
সাম্প্রতিক সময়ে সরোজ গজমীর, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ভুবন চন্দ্র মণ্ডল, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো প্রাক্তন পুলিশ কর্তা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এই প্রেক্ষিতে হুমায়ুন কবীরের পদত্যাগকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: ‘যৌনকর্মী’ বলে আক্রমণ সৌমিত্রর, সায়নীর কাছে ক্ষমা চাইল বিজেপি