বিরল ব্যতিক্রম তৈরি করে বিধানসভার আসন্ন অধিবেশনে রাজ্য বাজেট পেশ করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই মর্মে রাজ্যপালের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ও বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপালের প্রতি সরকারের এই সৌজন্যকেও বিরল বলছেন অনেকে।
চিকিৎসকের পরামর্শে বাইরে বেরনো নিষেধ। তাই এ বারের রাজ্য বাজেট পেশ করবেন না অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র। সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, শেষ মুহূর্তে বড়সড় বদল না হলে বাজেট পড়বেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি বিধানসভায় বাজেট পেশ করা হবে। সে দিনই ‘বিজনেস অ্যাডভাইজ়রি কমিটি’-র বৈঠকে সেই অনুমতি চাওয়া হতে পারে বলে ওই সূত্রে জানা গিয়েছে।
প্রতিটি অর্থবর্ষের শুরুতে রাজ্যের আর্থিক বিবরণ পেশ করতে হয় বিধানসভায়। নিতে হয় খরচের অনুমোদন। যা রাজ্য বাজেট বলে পরিচিত। মূলত অর্থমন্ত্রী এই বাজেট পেশ করেন। তবে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে বিধানসভার অধ্যক্ষ চাইলে অন্য কোনও মন্ত্রীও বাজেট পেশ করতে পারেন। যা নিয়ে সচরাচর কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তবে মুখ্যমন্ত্রীর নিজেরই বাজেট ভাষণ পড়ার নজির কম। বাজেটে সারা বছরের পরিকল্পনা ঘোষণা করা হলেও, খরচের অনুমোদন নেওয়া হবে আগামী তিন মাসের। যা ‘ভোট অন অ্যাকাউন্ট’ বলে পরিচিত।
আরও পড়ুন: নজরে বিধানসভা নির্বাচন, নির্মলার Budget 2021-এ বাংলার জন্য বরাদ্দে জোর, কী কী পেল রাজ্য?
নবান্ন সূত্রের দাবি, অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র ইতিমধ্যেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়কে চিঠি দিয়ে এ বছর বাজেট পড়া থেকে অব্যাহতি চেয়েছেন। সেই চিঠিতেই তিনি উল্লেখ করেছেন, মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছা এবং উপদেশেই তিনি এই চিঠি লিখছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে বাজেট পাঠের অনুমতি দেওয়ার জন্য ওই চিঠিতেই প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
রাজ্যের বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও একই চিঠি দিয়ে রাজ্যপালের অনুমতি চেয়েছেন। নবান্নের দাবি, রাজভবন থেকে জবাব এসে গিয়েছে। রাজ্যপাল মুখ্যমন্ত্রীর বাজেট পাঠে আপত্তি করেননি। একটি সূত্রের দাবি, বিষয়টি রাজ্যপালের এক্তিয়ারে পড়েও না। রাজ্যের হয়ে কে বাজেট পেশ করবেন, তা পুরোপুরি স্পিকারের অধিকারের বিষয়। সেক্ষেত্রে বাড়তি সৌজন্য দেখিয়ে অমিত মিত্র রাজ্যপালের অনুমতি চাইলেন কেন তা আলাদা প্রশ্ন। বিশেষ করে রাজ্য – রাজ্যপাল সংঘাতের যে নজির রাজ্যে রয়েছে তাতে এমন সৌজন্যে বিস্মিত অভিজ্ঞ মহল।
অনেকের ধারণা, ভোটমুখী বাজেটে বড় কোনও ঘোষণা থাকতে পারে। সরকার সরাসরি উপভোক্তা তৈরির কোনও প্রকল্প ঘোষণা করে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ‘মাস্টারস্ট্রোক’ দিতে পারে। সেই ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রী নিজে করলে তার প্রভাব অনেক বেশি হবে বলে তাঁদের মত। যদিও ভোটের আগে সেই প্রকল্পের বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।
আরও পড়ুন: বন সহায়ক নিয়ে কারসাজি, চুরি করে বিজেপিতে গিয়েছে: নাম না করে রাজীবকে বিঁধলেন মমতা