বিশাখাপত্তনম: ফিরে এল ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনার স্মৃতি। বিশাখাপত্তনমে রাসায়নিক কারখানায় বিষাক্ত গ্যাস দুর্ঘটনায় অন্তত আট জনের মৃত্যু হয়েছে। অসুস্থ হয়ে পড়েছেন প্রায় ১০০০ জন। গুরুতর অসুস্থ হয়ে স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি হয়েছেন বহু। বৃহস্পতিবার ভোরের এই ঘটনায় ব্যাপট চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের এই শহরে।
বিশাখাপত্তনমের দক্ষিণ শহরতলির কাছে গোপালপত্তনম এলাকায় রয়েছে এলজি পলিমার ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড নামের ওই রাসায়নিক কারখানা। মূলত পলিয়েস্টার পলিথিন তৈরি হত ওই কারখানায়। সেই কাজে ব্যবহার করা হত সিটাইরিন নামের গ্যাস। যা মানব শরীরের পক্ষে বিষাক্ত।
বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ ওই কারখানা থেকে গ্যাস লিক শুরু হয়। সে সময় কারখানায় ছিলেন শুধু নিরাপত্তারক্ষীরা। সেই গ্যাস লিক হওয়ায় অচৈতন্য হয়ে পড়েন তাঁরা। ফলে তখন খবর দেওয়া সম্ভব হয়নি। এর পর গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে থাকে লোকালয়ে। সাড়ে ৪টের দিকে আশেপাশের এলাকার বাসিন্দাদের চোখ জ্বালা ও শ্বাসকষ্ট শুরু হতে থাকে। যার জেরে ঘুম ভেঙে যায় অনেকের। খবর যায় পুলিশে। জরুরি ভিত্তিতে উদ্ধারের কাজে নামে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী।
এই ঘটনায় প্রায় ১০০০ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২০০ জনকে কিং জর্জ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আট জন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন। অসমর্থিত সূত্রের খবর, দশজনের অবস্থা বেশ আশঙ্কাজনক। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর এক অফিসার জানিয়েছেন, সোশ্যাস ডিসট্যান্সিং বজায় রেখে কাজ করার জন্য উদ্ধার কার্য চালাতে দেরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: এই দুই প্রাক্তন ক্রিকেটারকে নিয়ে বিয়ার খেতে ইচ্ছা করছে! মনের কথা প্রকাশ করে বিতর্কে শাস্ত্রী
বিষয়টি নিয়ে গ্রেটার বিশাখাপত্তনম মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন টুইট করে জানিয়েছে, ‘‘গোপালপত্তনমে এলজি পলিমার কারখানায় গ্যাস লিক করেছে। ওই এলাকার বাসিন্দাদের বাড়ির বাইরে না বেরোতে অনুরোধ করা হচ্ছে।’’ অন্ধ্রপ্রদেশের ডিজিপি ডিজি সায়াং বলেছেন, ‘‘এলাকা খালি করে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। দেশ জুড়ে লকডাউনের জন্য বন্ধ ছিল ওই কারখানা।’’
গ্যাস লিক পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনার ছবি-ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে। সেখানে প্রচুর মানুষকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখা যাচ্ছে। একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, স্কুটারে বসে থাকা অবস্থাতেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন এক মহিলা।
ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই টুইট করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডি অসুস্থদের দেখতে কিং জর্জ হাসাপাতালে যান।। তিনি পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছেন বলেও জানিয়েছেন। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী কংগ্রেস কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন সেখানকার অসুস্থ মানুষজনকে সহযোগিতার জন্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও বিশাখাপত্তনমের মানুষের সুস্থ হয়ে ওঠার জন্য প্রার্থনা করেছেন। বিষয়টির দিকে তিনি নজর রাখছেন বলেও জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ঘরে জায়গা নেই, নিমগাছেই কোয়ারেন্টাইনে সুরাত-ফেরত পাপ্পু