একই সঙ্গে গঙ্গা ও যমুনার জলস্তর বিপদসীমার কাছে যেতে শুরু করে দিয়েছে উত্তর ভারতে। হু হু করে জল বাড়ছে উত্তর ভারতের একাধিক নদীতে। এদিকে প্রবল বর্ষণে বিধ্বস্ত উত্তর ভারতের একাধিক জায়গা। ক্রমেই উত্তরের নীদগুলিতে বাড়তে শুরু করে দিয়েছে জলস্তর। উত্তর প্রদেশের বহু গ্রামে ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে প্লাবনের জল।
উত্তর প্রদেশে বন্যা (Flood)-এ ডুবেছে কমপক্ষে ৩৫৭টি গ্রাম। সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হামিরপুর ও জালুন জেলা। পরিস্থিতি সরোজমিনে খতিয়ে দেখতে আজ আকাশপথে পরিদর্শন করবেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ (Yogi Adityanath)।
#WATCH | A primary school got washed away following a rise in water level of Ghaghara river in Gonda, earlier today pic.twitter.com/6Jq7gPw0FZ
— ANI UP (@ANINewsUP) August 8, 2021
বর্ষার শুরু থেকেই জলমগ্ন হয়ে পড়েছিল উত্তর প্রদেশের বুন্দেলখণ্ড অঞ্চল। প্রতিবছর স্বাভাবিকের তুলনায় কম বৃষ্টি হলেও এইবছর অতিরিক্ত বৃষ্টির জেরে কমপক্ষে পাঁচটি জায়গায় যমুনা নদী বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। একই হাল গঙ্গারও। উত্তর প্রদেশের তিনটি জেলায় বিদপসীমার উপর দিয়ে বইছে গঙ্গা। প্লাবিত বদায়ুন, গাজিপুর ও বালিয়া।
আরও পড়ুন: ভারতে ছাড়পত্র পেল Johnson & Johnson -র টিকা, জরুরি ব্যবহারে অনুমোদন
Three #IAF helicopters carried out airlift of essentials and relief supplies for the population of #Jalaun district, Uttar Pradesh, stranded due to the recent floods.#HarKaamDeshKeNaam pic.twitter.com/7Fe20js0DJ
— Indian Air Force (@IAF_MCC) August 8, 2021
লাগাতার বৃষ্টি ও নদীর জলস্তর বৃষ্টি পাওয়ায় প্লাবিত হচ্ছে নদীর আশেপাশে অবস্থিত গ্রামগুলি। সরকারি সূত্রে খবর, বন্যার জেরে প্রায় ৯৩টি জেলার সঙ্গে সংযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। ধুয়ে মুছে গিয়েছে একাধিক বাড়ি-স্কুলঘর। আটকে পড়া বাসিন্দাদের উদ্ধারকার্যে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর নামলেও জলের স্রোত ও লাগাতার বৃষ্টির কারণে কাজে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। ভারতীয় বায়ুসেনার তরফে আকাশপথে ত্রাণ বিলি ও উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে।
সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, কোমর জলে মরদেহ বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন শবযাত্রীরা। স্থানীয় গুনা জেলার বাহাদুরা গ্রামে শুক্রবার (৬ আগস্ট) ঘটনাটি ঘটেছে। কামারলাল সাক্ষ্যভার নামের এক ব্যক্তির মরদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। এনডিটিভি জানিয়েছে, কয়েক ঘণ্টা ধরে জল কমে যাওয়ার অপেক্ষায় ছিল পরিবারটি। কিন্তু বন্যা কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় তারা কোমর সমান জলের ভিতর দিয়েই রওনা দিয়েছেন শব নিয়ে। যারা সাঁতার কাটতে পারেন, তাদেরই কেবল শববহনের জন্য নেওয়া হয়েছে।
পরবর্তীতে সেই ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে অনেককেই শোক জানাতে দেখা গেছে। এমনকি উন্নয়নের অভাবের বিষয়টি তুলে অনেকে সমালোচনায় সরব হয়েছেন। গুনা, গোয়ালিয়র, শিভপুরি, শোপুর, দাতিয়া, আশকনগর, বিন্দ ও মোরেনায় মুষলধারে বৃষ্টিতে বন্যা গ্রামবাসীদের বড় ধরনের সংকটে ফেলে দিয়েছে।
এছাড়া বন্যার জলে তলিয়ে গিয়েছে উত্তর প্রদেশের অন্যতম তীর্থস্থান বারাণসী। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন মৃতদেহ সৎকার করতে আসা স্বজনেরা। কোমর জলে নেমেই লাশ নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে তাদের। কেউ কেউ অপেক্ষা করছেন ঘণ্টার পর ঘণ্টা।স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, বন্যার জলে ঘাট ডুবে গেছে। দুই তিন ঘন্টা অপেক্ষা করেও আমরা মৃতদেহ সৎকার করতে পারছি না। নদীর পানি এতটাই বেড়েছে যে পুরো রাস্তা জলে তলিয়ে গেছে।এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। ঘাট সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানও হুমকির মুখে পড়েছে। জল বাড়ায় অস্থায়ী দোকানপাট সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘দেশের গুণ্ডা নরেন্দ্র মোদি, নেত্রী মমতা!’ ত্রিপুরার ঘটনা নিয়ে সংসদে সরব TMC