বিতর্কিত মন্তব্য ও কঙ্গনা রানাওয়াত যেন সমার্থক নাম। নিজেকে কিভাবে প্রচারের আলোতে রাহকতে হয়, তা কঙ্গনার চেয়ে ভালো বোধহয় কেউ জানে না। তা সে নেতিবাচক প্রচারই হোক। তাতেই যুদ্ধজয়ের অহং বোধ করেন তিনি। এবার সম্প্রতি, একটি নিউজ চ্যানেলের অনুষ্ঠানে ভারতের স্বাধীনতাকে ‘ভিক্ষা’ বলে কটাক্ষ করেন কঙ্গনা। যার জেরে ফের একবার বিতর্কের মুখে নায়িকা।
সদ্য পদ্মশ্রী-প্রাপক কঙ্গনা একটি টিভি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘১৯৪৭ সালে পাওয়া স্বাধীনতা আসলে স্বাধীনতা নয়। ছিল ভিক্ষা। স্বাধীনতা তো ২০১৪ সালে এসেছে।’’ নরেন্দ্র মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্ব প্রাপ্তির সাল হিসেবেই তিনি ২০১৪-কে চিহ্নিত করেন। কংগ্রেস (Congress) নেতা আনন্দ শর্মা (Anand Sharma) নিজের ট্যুইটার হ্যান্ডেলে কঙ্গনার ভারতের স্বাধীনতা মন্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন। তিনি বলেন,’ কঙ্গনার এই মন্তব্য অনভিপ্রেত। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উচিত কঙ্গনার পদ্মশ্রী (Padmashri) সম্মান ফেরৎ নেওয়া। কঙ্গনা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান করেছেন।’ মহাত্মা গান্ধী, সর্দার বল্লভভাই প্য়াটেল, ভগৎ সিং, চন্দ্রশেখর আজাদদের অপমান করছেন বলেও তোপ দাগেন আনন্দ শর্মা।
কঙ্গনার বিরুদ্ধে এবার দেশদ্রোহিতার মামলা দায়ের করার দাবি জানালেন শিবসেনা (Shiv Sena)নেত্রী নিলম গরহে (Neelam Gorhe)। গরহে বলেন, কঙ্গনা এই মন্তব্যের মাধ্যমে অটল বিহারী বাজপায়ী সহ দেশের সকল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীদের অপমান করেছেন। ফলে কঙ্গনার বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা রুজু করা উচিত বলেই তাঁর মত। এছাড়াও, এই মন্তব্যের জন্য তাঁর পদ্মশ্রী পুরস্কারও বাতিল করার দাবি জানান তিনি।
এনসিপি নেতা নবাব মালিকের মন্তব্য, ‘‘দেশের স্বাধীনতা নিয়ে এমন মন্তব্য করার আগে কঙ্গনা নিশ্চয়ই তাঁর হিমাচল প্রদেশের বাড়িতে বসে ‘মালানা ক্রিম’ (হিমাচলের মালানা গ্রামে তৈরি মাদক) সেবন করেছিলেন।’’ আম আদমি পার্টির মহারাষ্ট্র শাখা জানিয়েছে, বলিউডের অভিনেত্রীর বিরুদ্ধে তাঁরা মুম্বই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করবে। বিজেপি-র সহযোগী ‘হাম’-এর সভাপতি তথা বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জিতনরাম মাঝিঁ কঙ্গনাকে বয়কটের দাবি তুলেছেন শুক্রবার।
কঙ্গনার ওই আপত্তিকক মন্তব্যের পরেই বৃহস্পতিবার বিজেপি সাংসদ বরুণ গান্ধী টুইটারে লিখেছিলেন, ‘মহাত্মা গাঁধীর ত্যাগকে খাটো করা, তাঁর হত্যাকারীকে শ্রদ্ধার্ঘ্য দেওয়ার কথা তো ছেড়েই দিলাম। এ বার মঙ্গল পাণ্ডে, রানি লক্ষ্মীবাঈ, ভগৎ সিংহ, চন্দ্রশেখর আজাদ, সুভাষচন্দ্র বসু-সহ লক্ষ লক্ষ স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অপমান করা হচ্ছে। এই ধরনের চিন্তাভাবনাকে পাগলামি বলব না কি রাজদ্রোহ বলব?’