ভোটের বাংলায় বেনজির ঘটনা। কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে কোচবিহারের মাথাভাঙা মৃত্যু হয়েছে ৪ যুবকের। গোটা তোলপাড় পড়ে গিয়েছে গোটা রাজ্যে। নির্বাচন কমিশনের তরফেও কার্যত স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে ওই ঘটনা ঘটেছে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতেই। তড়িঘড়ি চাওয়া হয়েছে রিপোর্ট। ইতিমধ্যেই তৃণমূলের তরফে সুর চড়িয়ে বিজেপিকেই নিশানা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের পদত্যাগ দাবি করেছেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এহেন পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তরফে প্রাথমিকভাবে দাবি করা হয়েছে, আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে হয়েছে তাঁদের।
কেন এল আত্মরক্ষার প্রসঙ্গ? বাহিনীর দাবি, মাথাভাঙা এলাকার জোড়পাটকিতে তৃণমূল ভোটদানে বাধা দিচ্ছে বলে অভিযোগ আসে বাহিনীর কাছে। তড়িঘড়ি ওই এলাকায় ছুটে যায় কেন্দ্রীয় বাহিনী। হঠাৎই বাহিনীকে ঘিরে ধরে ৩০০-৪০০ লোক। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন বাহিনীর থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে অভিযোগ বাহিনীর। আর সেই সময়ই দু-পক্ষের ঝামেলা থামাতে এবং নিজেদের আত্মরক্ষার্থেই গুলি চালাতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় বাহিনী, এমনটাই দাবি কেন্দ্রীয় বাহিনীর।
এদিন যাঁদের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের নাম হামিদুল হক, হামিউল হক, নুর আলম,মনিরুল হক। এছাড়াও অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে খবর। বাহিনীর দাবিকে অবশ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকেই বলছেন, গুলি লেগেছে নিরীহ মানুষের গায়ে, যাদের সঙ্গে এই ঘটনার কোনও সম্পর্কই ছিল না।
আরও পড়ুন: বিনা অনুমতিতে রোড শো, শ্রাবন্তীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু পুলিশের
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এদিন ভোট হচ্ছিল অবাধ এবং শান্তিপূর্ণ ভাবেই। একটি ছোট বাচ্চাকে মারার ঘটনায় কিছু লোক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। এই কথাকাটাকাটির ফলে উত্তেজনা তৈরি হয়। তখনই এলোপাথাড়ি গুলি চালায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। এই মুহূর্তে থমথম করছে শীতলকুচি। স্থানীয়দের মত, কেন্দ্রীয় বাহিনী সামান্য সংবেদনশীল হলে চারটি তাজা প্রাণের চলে যাওয়া আটকানো যেত।
সূত্রের খবর, ঘটনার পর বাহিনী ওই এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছে। তৃণমূলের পক্ষ থেকে বিবৃতি দিয়ে দোলা সেন এ দিন বলেন, “কেন্দ্রীয় বাহিনী পরিধি লঙ্ঘন করছে, এই কথা যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, তখন তাঁকে দুবার শো-কজ করেছে নির্বাচন কমিশন। আজ যখন সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে, জবাব কে দেবে। এই মুহূর্তে ভোটচলাকালীন আইনশৃঙ্খলা রাজ্যের হাতে নেই। সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আমরা এর জবাব চাই। মানুষ শো-কজ করছে, কমিশন জবাব দিক।” পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলছেন, “এই ঘটনা বাংলায় কোনও দিন ঘটেনি”।
আরও পড়ুন: WB election 2021: শাহের পদত্যাগ দাবি মমতার, কাল বাংলার পথে তৃণমূল, কোচবিহার যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী