বড় মেয়ের শ্বাসকষ্টের সমস্যা। চিকিৎসা করানোর সার্মথ্য নেই দিনমজুর বাবা-মায়ের। তাই চিকিৎসার টাকার জন্য নিজের ছোট মেয়েকে ৪৬ বছরের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেছিলেন অন্ধ্রপ্রদেশের নেল্লোরের ওই দম্পতি। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করেছেন মহিলা ও শিশু কল্যাণ দফতরের অফিসাররা। আপাতত তাকে শিশু পরিচর্যা কেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানে তার কাউন্সেলিংও করানো হচ্ছে।
নেল্লোর জেলার কট্টুরের বাসিন্দা ওই পরিবার দিনমজুর। তাঁদের বড় মেয়ের বয়স ১৬ বছর। দীর্ঘদিন ধরেই সে শ্বাসযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিল। হতদরিদ্র মা-বাবা বহু চেষ্টা করেও চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে পারছিলেন না। এই পরিস্থিতে বছর ৪৬-র এক প্রতিবেশী তাঁদের ছোট মেয়েকে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। বাধ্য হয়ে ১০ হাজার টাকার বিনিময়েই সেই প্রতিবেশীর কাছেই নিজেদের ১২ বছরের ছোট মেয়েকে বিক্রি করে দেন ওই দম্পতি।
আরও পড়ুন: লোক দেখানো ‘ডিজিটাল স্ট্রাইক’! এখনও ‘আত্মনির্ভর’ ভারতের সিংহভাগ ব্যবসায় সহযোগী চিন
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম চিন্না সুবাবাইয়া। তিনি বিবাহিত হলেও দাম্পত্য অশান্তির কারণে তাঁর স্ত্রী তাঁকে ছেড়ে চলে যায়। সেই সময়ও চিন্না ওই পরিবারের ছোট মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয়। সেই সময় প্রস্তাব খারিজ করে দিলেও সম্প্রতি বড় মেয়ের চিকিৎসার খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছিলেন ওই দিনমজুর পরিবার।
সেই সুযোগকেই কাজে লাগান ওই ব্যক্তি। এক প্রকার নিরুপায় হয়েই চিন্নার প্রস্তাবে রাজি হন ওই দম্পতি। নাবালিকার মা-বাবা ২৫ হাজার টাকা দাবি করলেও চিন্না দরদাম করে ১০ হাজারে রফা করে। এরপর গত বুধবার তিনি ওই কিশোরীকে বিয়ে করে দামপুরে নিজের আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে যান। রাতে ঘর থেকে কিশোরীর চিৎকার ও কান্নার শব্দ শুনে প্রতিবেশীরা হাজির হন। এরপরই সমস্ত ঘটনা জানতে পেরে তাঁরা গ্রামের সরপঞ্চের কাছে গিয়ে সমস্ত বিষয়টি জানান। তিনিই রাতে নারী ও শিশু কল্যাণ দফতরে খবর দেন। সকালে তাঁরা ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে সরকারি শিশু আবাসনে নিয়ে যান।
এদিকে, পুলিশ অভিযোগ পাওয়ার পরই ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে এবং জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আটক করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ১০০ টাকা খরচ করে ১ কোটির মালকিন গৃহবধূ