নয়াদিল্লি: বিজয় মালিয়া, মেহুল চোকসি ও নীরব মোদীর পরে ফের বড় মাপের ব্যাঙ্ক প্রতারকদের সন্ধান পাওয়া গেল। ৬ ব্যাঙ্ক থেকে ৪১৪ কোটি টাকা প্রতারণার পরে দেশ ছেড়ে পালালেন দিল্লির সংস্থার তিন মালিক।
সম্প্রতি এসবিআইয়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে ওই ঋণখেলাপি সংস্থা তথা তার মালিকদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। ইতিমধ্যেই ওই সংস্থার মালিক-সহ অজ্ঞাতপরিচয় সরকারি কর্মচারিদের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলাও রুজু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাটি।টানা ৪ বছর অপেক্ষার পর স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া এনিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি। তারপর এনিয়ে তদন্তে নামল সিবিআই।
দিল্লির এক বাসমতী চাল রফতানিকারী সংস্থার ওই তিন মালিকের বিরুদ্ধে সম্প্রতি সিবিআই-এর কাছে অভিযোগ দায়ের করেছে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া।প্রশ্ন হল এত দেরিতে অভিযোগ কেন? এতদিন কি স্টেট ব্যাঙ্ক দেখতে চাইছিল ‘দেখিনা কি করে?’নাকি তারা যাতে নিরাপদে পালিয়ে যেতে পারে সে অবকাশ দেয়া হচ্ছিলো? ‘আল ইজ ওয়েল’ বলে কী চৌকিদার যোগসাধনায় বসেছিলেন প্রশ্ন জাগছে আম জনতার মনে।
আরও পড়ুন: রাম মন্দির নির্মাণে দান করুন, মিলবে করছাড়, করোনাতঙ্কের মধ্যেই ঘোষণা কেন্দ্রের
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দিল্লির দিল্লির রাম দেব ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয় স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া (এসবিআই)। অভিযোগ, এসবিআই-সহ দেশের ছ’টি ব্যাঙ্ক থেকে মোট ৪১৪ কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার পর তা ফেরত না দিয়েই ২০১৬ সালে দুবাই পালিয়ে গিয়েছেন সংস্থার তিন ডিরেক্টর। পাশাপাশি, ব্যাঙ্কের টাকা হাতানোর জন্য কারখানা ও তার সমস্ত মেশিনারিও বিক্রি করে ফেলেছে সংস্থাটি।
গত ২৮ এপ্রিল ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছে সিবিআই। রামদেব ইন্টারন্যাশনাল ৬টি ব্যাঙ্কে থেকে ধার নিয়েছে মোট ৪১৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৭৩.১১ কোটি টাকা নিয়েছে এসবিআই থেকে, ৭৬.০৯ কোটি টাকা কানাড়া ব্যাঙ্ক থেকে, ৬৪.৩১ কোটি টাকা নিয়েছে ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক থেকে, সেন্টাল ব্যাঙ্ক থেকে নিয়েছে ৫১.৩১ কোট, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক থেকে নিয়েছে ৩৬.৯১ কোটি ও আইডিবিআই ব্যাঙ্ক থেকে নিয়েছে ১২.২৭ কোটি টাকা।
গোটা বিষয়ে সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানাতে এত দেরি কেন হল? এসবিআইয়ের দাবি, “অভিযোগ জানাতে একেবারেই বিলম্ব হয়নি।” তার কারণ হিসাবে এসবিআই জানিয়েছে, সংস্থার মালিকেরা ‘নিখোঁজ’ থাকলেও সে সম্পর্কে গত বছরই নিশ্চিত হতে পেরেছে তারা। ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল (এনসিএলটি)-এ ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অন্য একটি মামলার সূত্রে সে বিষয়ে নিশ্চিত হয় এসবিআই। ওই মামলায় সংস্থার মালিকদের বিরুদ্ধে ২০১৮-র মে মাস থেকে এনসিএলটি তিন বার নোটিস পাঠালেও হাজিরা দেননি তাঁরা। সে বছরের ডিসেম্বরে এনসিএলটি-তে জানানো হয়, দিল্লির ওই সংস্থার মালিকরা দুবাইয়ে পালিয়ে গিয়েছেন। এর পর ঋণের অর্থ ফেরত পাওয়ার আশা ক্ষীণ হওয়ায় অবশেষে সিবিআইয়ের দ্বারস্থ হয় এসবিআই।
আরও পড়ুন: এত দিন পর মুখ খুলে মিথ্যে বলছেন, ক্ষমা চান, শ্রমিক ইস্যুতে শাহকে তোপ অভিষেকের