বাংলায় বাড়ল কার্যত লকডাউনের মেয়াদ, ১৫ জুন পর্যন্ত কড়া বিধিনিষেধ

বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখন যা যা বিধিনিষেধ কার্যকর হচ্ছে, আগামিদিনেও সেগুলি চলবে।
Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest

রাজ্যে কার্যত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ল আরও ১৫ দিন। জুন মাসের ১৫ তারিখ পর্যন্ত কার্যত লকডাউন জারি থাকবে রাজ্যে। একই পূর্ববর্তী বাধা-নিষেধের নিয়মই জারি থাকছে এ বারও। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, এ বারও সকাল ৭টা থেকে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে বাজার। একই নিয়মে মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পাশাপাশি শাড়ি ও সোনার দোকান খোলা রাখার ক্ষেত্রেও নিয়ম একই থাকছে। মমতা জানান, এই বাধা-নিষেধে মানুষ সহযোগিতা করছেন। করোনা সংক্রমণ কিছুটা হলেও কমেছে। তাই সংক্রমণ আরও কমাতে লকডাউন বৃদ্ধি করছে রাজ্য সরকার।

বৃহস্পতিবার নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এখন যা যা বিধিনিষেধ কার্যকর হচ্ছে, আগামিদিনেও সেগুলি চলবে। কয়েকটি ক্ষেত্রে শুধুমাত্র ছাড় দেওয়া হয়েছে।মমতা বলেন, ‘আপনাদের একটা ধন্যবাদ জানাব, কোভিড কিছুটা হলেও কমেছে। এই যে আমরা বাধানিষেধ জারি করেছি, মানুষ তো এগুলিতে সহযোগিতা করছেন। মানুষ নিজেকেও নিজে রক্ষা করছেন। এর ফলে কিছুটা হলেও কমেছে। যেহেতু কিছুটা হলেও আমরা আর একটু সময় নিচ্ছি। এটার জন্য আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেব।’

তবে এতদিন পাটশিল্পে ৩০ শতাংশ কর্মী উপস্থিত থাকতে পারতেন। এবার তা বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়েছে। সেইসঙ্গে মেনে চলতে হবে করোনা সংক্রান্ত সুরক্ষা-বিধি। একইসঙ্গে করোনাভাইরাস টিকা নিয়ে নির্মাণ শিল্পে কাজ চালানো যাবে। সেক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে যাবতীয় করোনা-বিধি পালন করতে হবে বলে জানিয়েছেন মমতা। তিনি বলেন, ‘অর্থনীতি যাতে ধ্বংস না হয়, তাই অর্থনীতি, জরুরি পরিষেবা – যেগুলি চলছে, সেগুলি চলবে। অনলাইনে যা যা চলার চলছে। কারখানাও চলছে, কিছুটা বিধিনিষেধের সঙ্গে।’ তবে সেই বিধিনিষেধকে ‘লকডাউন’ বা ‘কার্ফু’ হিসেবে ব্যাখ্যা করতে নিষেধ করেছেন মমতা।

এক নজরে রাজ্যে জারি থাকা বিধি-নিষেধ: 

* সমস্ত স্কুল, কলেজ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।

* সব সরকারি-বেসরকারি অফিস-প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কেবল অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা চালু থাকবে।

* শপিংমল, সুইমিংপুল, রেস্তোরাঁ বন্ধ থাকবে।

* আন্তঃরাজ্য বাস পরিষেবা, অটো, মেট্রো বন্ধ থাকবে। ট্যাক্সি পরিষেবা চালু থাকবে এমার্জেন্সি পরিষেবার জন্য। রাজ্যের মধ্যে ট্রাক চলাচল বন্ধ। চিকিৎসা সামগ্রী, অক্সিজেন, খাদ্য সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নিয়ে যাওয়া যাবে না।

* মুদিখানা, খুচরো দোকান, বাজার, যা কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সেগুলি কেবল সকাল ৭টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে

* মিষ্টির দোকান সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

* ওষুধের দোকান, চশমার দোকান স্বাভাবিক সময় খোলা থাকবে।

* রাজনৈতিক, ধর্মীয় সমাবেশ বন্ধ থাকবে।

* চিকিৎসা ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ক্ষেত্রে সমস্তরকম ছাড় দেওয়া হবে।

* চা বাগানে কাজ চলতে পারে ৫০% উপস্থিতিতে, চটকলে তা ৩০%

* ই-কমার্স ক্ষেত্রে সমস্ত পরিষেবা চালু থাকবে।

* এটিএম, ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে সকাল ১০ থেকে দুপুর ২টো

* বিয়েবাড়িতে ৫০ জনের উপস্থিতির অনুমতি

* সৎকারের ক্ষেত্রে ২০ জনের উপস্থিতির অনুমতি

* রাত ৯টার পর সব কিছু বন্ধ, কেবলমাত্র এমার্জেন্সির ক্ষেত্রে অনুমতি।

আরও পড়ুন: ইয়াস মোকাবিলায় নবান্নর কন্ট্রোল রুমে রাজ্যপাল, বসলেন মমতার পাশের চেয়ারেই

কোন কোন ক্ষেত্রে মিলবে ছাড়?

ই-কমার্স, হোম ডেলিভারি: বাজার বন্ধ থাকবে, তাই প্রয়োজনীয় জিনিস কিনতে ই-কমার্স সংস্থাগুলির ওপর ভরসা করতে হবে। এছাড়া সুইগি বা জোমাটোর মধ্যে হোম ডেলিভারি পরিষেবা চালু থাকবে। যে সব সংস্থার হোম ডেলিভারি দেওয়ার সুবিধা আছে, তারা দিতে পারবে।

মুদির দোকান, খুচরো দোকান:  শুধু সকালেই দোকান খুলবে। সকাল ৭ টা থেকে ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে দোকান।

বাজার: সাধারণ বাজারের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। বিকেলে বাজার খোলা হবে না। সকাল ৭ টা থেকে ১০ টার মধ্যেই বাজার সারতে হবে। মাছ, মাংস, সবজি, ফল -এসবই পাওয়া যাবে।

ব্যাঙ্ক/ এটিএম: গত বছর লকডাউনে পূর্ণ সময়ের জন্য খোলা ছিল ব্যাঙ্ক। কিন্তু এবার ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে ৪ ঘণ্টার জন্য। সকাল ১০ টা থেকে ২ টো পর্যন্ত ব্যাঙ্কে কাজ চলবে। এটিএম পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও বাধা-নিষেধ নেই।

পেট্রোল পাম্প, অটো রিপেয়ার: বাস, অটো, বন্ধ থাকলেও ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। এছাড়া চিকিৎসক, নার্স ও সংবাদমাধ্যমের গাড়ির ক্ষেত্রে ছাড় রয়েছে। তাই খোলা থাকবে পেট্রোল পাম্প। গাড়ি মেরামতের দোকানও খুলে রাখা হবে।

ওষুধ দোকান, চশমা দোকান: জরুরি পরিষেবার মধ্যে অবশ্যই পড়ে ওষুধ, তাই ওষুধ দোকান খোলা থাকবে। পাশাপাশি চশমার দোকানের ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে।

মিষ্টির দোকান: মিষ্টির দোকানের ক্ষেত্রে দেওয়া হয়েছে আংশিক ছাড়। খোলা থাকবে সকাল ১০ টা থেকে বিকেল ৫টা।

চা বাগান: চা বাগানে কাজ একেবারে বন্ধ করা হচ্ছে না। ৫০ শতাংশ শ্রমিকের উপস্থিতিতে কাজ হবে সেখানে

জুটমিল : এই শিল্পের ক্ষেত্রেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। তবে সব শ্রমিক আসতে পারবেন না। ৩০ শতাংশ কর্মীকে নিয়ে কাজ চালানো যাবে।

ট্যাক্সি (জরুরি পরিষেবা): ট্যাক্সি পরিষেবা বন্ধ থাকলেও জরুরি পরিষেবার ক্ষেত্রে ট্যাক্সিতে ছাড় রয়েছে।

বিয়ে বাড়ি: ৫০ জন অতিথিকে নিয়ে বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান করা যেতে পারে, তবে অবশ্যই করোনার বিধি নিষেধ মানতে হবে।

আরও পড়ুন: জেলায় বজ্রবিদ্যুৎ-সহ বৃষ্টি, ঝড়ের গতিবেগ হতে পারে ঘণ্টায় ৩০-৪০ কিমি

Share on facebook
Share on twitter
Share on linkedin
Share on telegram
Share on whatsapp
Share on email
Share on reddit
Share on pinterest