এবার তৃণমূলে যোগ দিলেন RTI-কর্মী তথা সমাজসেবী সাকেত গোখলে। জাতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী মুখ হিসাবেই পরিচিত সাকেত। অনেকে তাঁকে কংগ্রেস সমর্থক বলেও দেগে দিয়েছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দিল্লিতে তৃণমূলে নাম লিখিয়েছেন সাকেত (Saket Gokhle)।
এদিন তৃণমূলে যোগদানের পর সাকেত জানান, ‘সংসদে তৃণমূল দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল। বিজেপি বিরোধিতায় যোগ্য মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সামনে থেকে লড়াই করছেন, আমার সেটাই প্রয়োজন।’ সাকেতের যোগদানের প্রসঙ্গ তুলে টুইটে তৃণমূলের তরফে জানানো হয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনমনীয় মানসিকতায় অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলের পরিবারে এলেন সাকেত গোখলে। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, ডেরেক ও ব্রায়ান ও যশবন্ত সিনহা।
উল্লেখ্য, সাকেতের করা আরটিআইয়ের ভিত্তিতে এর আগে অনেক তথ্যই প্রকাশ্যে এসেছে যা জাতীয় রাজনীতিতে তোলপাড় ফেলেছে। আরটিআই করার জন্য সাকেত সোশ্যাল মিডিয়ায় ভালোই পরিচিত। এই ধরনের একজন কর্মী দলে এলে আগামিদিনে সাংগঠনিকভাবে তৃণমূল আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
গত বিধানসভা ভোটে বিজেপিকে রুখে দেওয়ার পর তৃণমূলের পরের লক্ষ্য আগামী লোকসভা নির্বাচনে দিল্লিতে বিজেপিকে রুখে দেওয়া। গত বিধানসভা ভোটের ঠিক আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা। বাংলায় ভোটে জয়লাভের পর জাতীয় রাজনীতিতে তৃণমূলের গুরুত্ব যে বাড়ছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এই পরিস্থিতিতে সাকেতের তৃণমূলে যোগদান করা বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও মজবুত করবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন : ‘বিজেপির পার্টি অফিসে তৈরি প্রশ্নপত্র’, CAPF পরীক্ষা নিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ মমতার
প্রাক্তন সাংবাদিক ও আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট সাকেত জানিয়েছেন, “অদূর ভবিষ্যতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গোটা দেশে বিরোধী শিবিরকে নেতৃত্ব দিতে চলেছেন। যদিও প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে দেখা যাবে কি না তা ঠিক করবে বিরোধী শিবির। কিন্তু এ কথা বলা যেতে পারে গোটা দেশে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত লড়াকু নেত্রী অত্যন্ত কম।”
সাকেত এদিন আরও জানিয়েছেন, “রাজধানী দিল্লিতে আমার দীর্ঘদিন ধরে যাতায়াত। বহু রাজনৈতিক দলকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াই আমাকে প্রভাবিত করেছে। সংসদের অন্দরে তৃণমূল সাংসদের জেদি মনোভাব এবং এককাট্টা হয়ে দাবি আদায়ের মনোভাব দেখেছি। যা অন্য কোন রাজনৈতিক দলে আমি দেখিনি।”
একান্ত সাক্ষাৎকারে সাকেত বলেছেন, দেশের রাজনীতি সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল তিনি। অতীতে ৩৪ বছরের বাম সরকারকে পরাস্ত করে যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মা-মাটি-মানুষের সরকার প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা গোটা দেশের কাছে নজির। এরপর গত বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির অর্থবল, লোকবল, কেন্দ্রীয় এজেন্সির অপপ্রয়োগ এবং সামগ্রিক একতরফা আক্রমণ সত্বেও তুড়ি মেরে বিজেপিকে পরাস্ত করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা দেখেই তৃণমূল কংগ্রেসের যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত সাত বছরে মোদি সরকার কে বারবার বিরম্বনায় ফেলেছেন এই আরটিআই অ্যাক্টিভিস্ট। নানা বিষয়ে অপ্রিয় প্রশ্ন করে সরকারের চক্ষুশূল হয়েছিলেন তিনি। প্রাক্তন এই সাংবাদিক দেশের হয়ে বহু আন্তর্জাতিক ইভেন্টে অংশ নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের হয়ে কভার করেছেন। নির্বাচন কমিশন সম্পর্কিত সাক্ষাতের আরটিআই সর্বজনবিদিত।
আরও পড়ুন : ৩১ অগস্ট পর্যন্ত রাজ্যে চলবে না লোকাল ট্রেন , নবান্নে বললেন মুখ্যমন্ত্রী Mamata